হার্ভে উইনস্টেইন’র যৌন কুকীর্তি ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই বিভিন্ন সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির মুখোশ খুলছে। আর এ বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুললেন জাতীয় পুরস্কারজয়ী বলিউড অভিনেত্রী বিদ্যা বালান।
ক্যারিয়ারে নিজের যৌন হেনস্ত্মার কথা বলতে গিয়ে বিদ্যা বলেন, এ রকম পরিস্থিতির শিকার তিনিও হয়েছিলেন। সে সময় একেবারে নতুন তিনি। বাবাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন অডিশনে। সেখানেই তিনি দেখেন- এক পরিচালক দীর্ঘক্ষণ তার বুকের দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু বিদ্যা চুপ করে থাকেননি। মুখের ওপর জানতে চেয়েছিলেন, কী দেখছেন? তাতেই হকচকিয়ে যান ওই ব্যক্তি। সেদিন বাবাকে অবশ্য ঘুণাক্ষরেও কিছু জানতে দেননি বিদ্যা। তাতে বাবা ভেঙে পড়তে পারতেন। কিন্তু সেদিনের ঘটনা আজও ভোলেননি নায়িকা। আজ তাই সবাই যখন যৌন হেনস্ত্মা নিয়ে সরব, তখন তার জীবনে ঘটা একমাত্র ঘটনাটির কথাও তুলে এনেছেন বিদ্যা।
এর আগে বলিউডের একাধিক অভিনেত্রী যখন যৌন হেনস্ত্মা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন, তখন বিদ্যা জানিয়েছিলেন, এই সমঝোতার জায়গাটা নারীদের ওপরই নির্ভর করে। প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি বিদ্যা নারীদেরই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন?
পরে এক সাক্ষাৎকারে বিদ্যা পুরো বিষয়টি খোলসা করেন। জানান, নারীদের দোষ দিচ্ছেন না তিনি। কিন্তু এ রকম কোনও ঘটনা ঘটলে কেউ যেন চুপ করে না থাকেন। প্রতিবাদে সরব হন। সে কথাই বলতে চেয়েছেন তিনি। ইন্ডাস্ট্রিতে বলিষ্ঠ অভিনেত্রীই শুধু নন, সাহসী মানসিকতার নারী হিসেবেও তিনি পরিচিত। নিজের ঘটনার উদাহরণ টেনেই বিদ্যা বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই হেনস্ত্মা একবারে গোড়াতেই বিনাশ করতে হয়। নয়তো লতায়-পাতায় তা বাড়তে থাকে এবং অভিনেত্রীদের গ্রাস করে নেয়।
তিনি জানান, প্রতি ইন্ডাস্ট্রিতে হার্ভে উইনস্টেইনের মতো ব্যক্তিরা আছেন। বিদ্যার সাফ কথা, প্রত্যেক নারীরই ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় আছে। নারীরা ঠিক বুঝতে পারেন কোনোটা খারাপ ইঙ্গিত, আর কোনোটা নয়।
ভারতের সংবাদ প্রতিদিনের খবরে বলা হয়, তিনি তার ব্যক্তিগত দর্শন ভাগ করে জানান, রম্নটি-রম্নজির জন্য তিনি নিজের মর্যাদা খোয়াতে পারবেন না। কিন্তু কোনো একজন নারী যখন কারও সঙ্গে কফি খেতে যাচ্ছেন, তখন নিশ্চয়ই তিনি চাইছেন বলেই যাচ্ছেন। এখন সেটা ভালো না খারাপ সেটা নারীরা নিশ্চয়ই অনুভূতি দিয়ে বুঝতে পারেন। তিনি সমঝোতা করবেন কি করবেন না, সেটা একান্ত্মই তার ব্যাপার।
কিন্তু অস্বস্ত্মিবোধ হলে গোড়াতেই রম্নখে দাঁড়ালে বা তা এড়িয়ে গেলে বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে বলে মত অভিনেত্রীর। তাতে একজন নারী তার কর্মক্ষেত্রে মর্যাদা নিয়ে কাজ করতে পারবেন বলেই মনে করেন জাতীয় পুরস্কারজয়ী এই অভিনেত্রী।
