মিয়ানমারের বিচারের এখতিয়ার আইসিসির নেই : জাতিসংঘে সু চির মন্ত্রী

228

অতীতের ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘের বিতর্কপর্বেও আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারিক এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মিয়ানমার। সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দাবি করেছেন, ধোঁয়াশাপূর্ণ আইনগত পরিসর থেকে আইসিসি মিয়ানমারের বিচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ধরনের পদক্ষেপে আইসিসি নিজেই গ্রহণযোগ্যতা হারাবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ৭ লাখ মানুষ। রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করার সময় তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধগুলো যুদ্ধাপরাধ নাকি মানবতাবিরোধী অপরাধ; এরইমধ্যে তা খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসি। মিয়ানমার সেই মুষ্টিমেয় দেশগুলোর একটি, যারা আইসিসি সনদে স্বাক্ষর করেনি। তাই সরাসরি মিয়ানমারের বিচারের এখতিয়ার আইসিসির নেই। এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে শুরু থেকেই তারা আইসিসির বিচারিক এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছে। তবে আইসিসি মনে করছে, মিয়ানমার এই আদালতের সদস্য না হলেও বাংলাদেশ অন্যতম সদস্য দেশ। তাই এ ঘটনার বিচার করার এখতিয়ার আদালতের রয়েছে। কারণ আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশের ধরনের জন্যই এই বিচার সম্ভব। এক প্রসিকিউটরের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৬ সেপ্টেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে সংস্থাটির তিনজন বিচারক বিশিষ্ট প্রি-ট্রায়াল কোর্ট বিচারের পক্ষে রায় দেন। আদালত বলেছে, মিয়ানমার এই আদালতের সদস্য না হলেও বাংলাদেশ অন্যতম সদস্য দেশ। তাই এ ঘটনার বিচার করার এখতিয়ার আদালতের রয়েছে। কারণ আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশের ধরনের জন্যই এই বিচার সম্ভব। জাতিসংঘ ভাষণে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপেদষ্টা অং সান সু চির দফতরের মন্ত্রী টিনথ শুয়ে দাবি করেছেন, আইসিসি এমন একটা প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারের বিচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যখন অভ্যন্তরীণভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির সুযোগ ফুরিয়ে যায়নি। তিনি দাবি করেন, এই ধারার কর্মকা- কেবল ওই আদালতের নৈতিক ও আইনগত এখতিয়ারকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে’। তার দাবি, যেখানেই তারা মানবাধিকার হরণের আলামত পাচ্ছেন, সেখানেই দোষীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন। গত মাসে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির অফিস থেকে জানানো হয়েছিল, এই বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের জড়ানোর কোনই বাধ্যবাধকতা নেই এবং এই বিচার প্রক্রিয়া ভবিষ্যতের জন্য কোনও ভালো দৃষ্টান্ত হবে না।