নদী গুলোর এই সমস্যা একদিনে তৈরী হয়নি। উজানে ভারত অংশে ফারাক্কা ব্যারেজসহ অন্যান্য নদীর উজানেও নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে। ফলে ভারত থেকে বয়ে আসা পানি প্রবাহ বাংলাদেশ অংশে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। পদ্মায় কিছুটা খালেও মহানন্দা ও পাগলায় পানি প্রবাহ নেই বললেই চলে। এহেন অবস্থায় জেলাবাসীর পক্ষে মহানন্দা নদীতে রাবারড্যাম নির্মাণ ও নদী খননের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ। এর পর ২০১১ সালের ২৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁপাইনবাবগঞ্জ সফরে এসে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল এক জনসভায় রাবারড্যাম ও নদী খননের প্রতিশ্রুতি দেন। ১৮৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পও গ্রহণ কের পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিরি চয়বছর পার হলেও প্রকল্পেটি আলোর মুখ দেখেনি। এমন অবস্থায় সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম বীর প্রতীকসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সফর করেছেন। মহাজোট সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম বীর প্রতীক নতুন করে ঘোষণা দিয়েছেন আগামী দ’বছরের মধ্যেই মহানন্দায় রাবারড্যাম নির্মাণ করা হবে এবং সেই সাথে নদীও খনন করা হবে। আমরা চাই, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদ্বয়ের আশ্বাস বাস্তবে রূপলাভ করুক। বাস্তবায়িত হোক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি। প্রকল্পটি বাস্তবাতি হলে নদী সংলগ্ন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, ভোলাহাট, গোমস্তাপুর, শিবগঞ্জ ও নাচোল উপজেলাসহ রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার জনসাধারণ পানির প্রাত্যতা নিশ্চিৎ হবে, ৮ হাজার হেক্টর জমি চাষের আওতায় আসবে। ফলে ৫৫ কোটি ৫৫ লাখ ৬৬ হাজার টাকা মূল্যের ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে। সেই সাথে মহানন্দা নদীতে ৬৫ কি.মি. বিশাল জলাধার তৈরী হবে। ফলে প্রতিবছর ২ কোটি ৩২ লাখ ৬৪ হাজার টাকার মাছ উৎপাদন করা যাবে এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর বৃদ্ধি হবে। এতে বরেন্দ্র অঞ্চলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে এবং জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।মহানন্দা নদী ফিরে পাবে নাব্যতা, পাওয়া যাবে দেশি মাছ, বরেন্দ্র এলাকাসহ বিস্তীর্ণ এলাকার জনসাধারণ হবে উপকৃত, ফিরে আসবে জীববৈচিত্র, রক্ষা পাবে পরিবেশের ভারসাম্য।