ভিন্ন আঙ্গিকে পপি

211

পুরো নাম সাদিকা পারভিন পপি হলেও বাংলাদেশের মানুষ পপি নামেই তাকে চেনেন। ১৯৯৭ সালে ‘কুলি’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে রূপালী পর্দায় কাজ শুরু করেন এ অভিনেত্রী। এ পর্যন্ত ‘কারাগার’ (২০০৩), ‘মেঘের কোলে রোদ’ (২০০৮) ও ‘গঙ্গাযাত্রা’ (২০০৯)-এ তিনটি ছবিতে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। বর্তমান সময়ের কাজ সম্পর্কে বলতে গিয়ে দেড় যুগেরও বেশি সময় পর্দায় বিচরণ করা এই অভিনেত্রী বলেন, তেমন ভালো কাজ তো এখন হচ্ছে না। সারা বছর অনেক ছবি মুক্তি পেলেও হিটের তালিকায় ছবির সংখ্যা অনেক কম। এমন সময় তো দেখতে চাইনি।
এসব ভাবলে শুধু আফসোস না, খারাপও লাগে। এই অবস্থার পরিবর্তন দেখতে চাই। ইদানীং নিজের ওজন কমিয়ে ভিন্ন লুকে নতুন বছরে নতুন ছবি নিয়ে দর্শকের সামনে হাজির হতে যাচ্ছেন পপি। নতুন কাজ নিয়ে তিনি বলেন, ‘টার্ন’ ও ‘যুদ্ধ শিশু’ নামের নতুন দুটি ছবিতে সামনে অভিনয় করবো। নির্মাতা নিজেই এ ছবির কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন। এরইমধ্যে ‘যুদ্ধ শিশু’ সিনেমার মহরত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে জন্ম নেয়া যুদ্ধ শিশুদের নিয়েই ছবির গল্প আবর্তিত হবে। দুটি ছবিই পরিচালনা করবেন শহীদুল হক খান। এরমধ্যে ‘টার্ন’ ছবিতে দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করতে যাচ্ছি, যেখানে একই সঙ্গে প্রতিবন্ধী ও বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন তরুণীর চরিত্রে আমাকে দেখা যাবে। এর আগে আমার এমন কোনো গল্পে অভিনয় করা হয়নি। দু’-তিন সপ্তাহের মধ্যে এর দৃশ্যধারণ শুরু হবে। ‘যুদ্ধ শিশু’ সিনেমাটির সুইডেনে শুটিং হবে। এদিকে ‘টার্ন’ ও ‘যুদ্ধ শিশু’ ছাড়াও পপি আশাবাদী তার মুক্তি প্রতীক্ষিত অন্যান্য ছবি নিয়েও। সে তালিকায়
আছে ‘শর্ট কাটে বড় লোক’, ‘জীবন যন্ত্রণা’, ‘দুই ভাইয়ের যুদ্ধ’সহ আরো কিছু ছবি। সবশেষ পপিকে দর্শকরা সিনেমা পর্দায় ‘সোনাবন্ধু’ ছবিতে দেখেছেন। এ ছবিটি পরিচালনা করেন জাহাঙ্গীর আলম সুমন। ইদানীং নতুন কাজ হলেও ছবি হিটের সংখ্যা কম কেন জানতে চাইলে পপি বলেন, এই সময়ের প্রযোজক যারা চলচ্চিত্রে কাজ করার প্রস্তাব দিচ্ছেন তাদের বেশিরভাগকেই আমি চিনি না। সেটাও সমস্যা না, তবে সিনেমাটি শেষ পর্যন্ত হবে কি-না তাও বুঝতে পারি না। শুধু কথা হলে তো হবে না। কাজটা ঠিকভাবে হতে হবে। অর্থাৎ পেশাদার প্রযোজক এখন নেই বললেই চলে। অবশ্যই সময়ের ধারায় অনেক কিছুর পরিবর্তন হবে। তবে সেই পরিবর্তনটা ভালো কিছুর জন্য হোক সেটাই প্রত্যাশা করি। আর সস্তা কিছু করে দর্শকের মনে কষ্ট দিতে চাই না। শোনা যায় অনেক সময় ফোনে আপনাকে পাওয়া যায় না? এর উত্তরে পপি বলেন, অনেকে শুধু ডিস্টার্ব করার জন্য ফোন করে। কাজের বিষয়ে তেমন কোনো কথা বলে না। তাই ইচ্ছে করেও অনেক সময় ফোন ধরি না। আমি ভালো কাজের অপেক্ষায় সবসময়ই থাকি। এর বাইরে আর কিছু বলার নেই। পপি আরো বলেন, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে একটা সময় অনেক বড় ধরনের কাজ হয়েছে। আর এখন বেশিরভাগ সিনেমার বাজেট শুনি খুবই কম। ভালো প্রোডাকশন দিনের পর দিন কমছে। হলিউড, বলিউড বা পৃথিবীর অন্য কোনো ইন্ডাস্ট্রিতে যখন দর্শকরা ভালো কাজ দেখতে পাচ্ছে ঠিক তখন আমাদের এখানে ভালো কাজের সংখ্যা কমছে। এটা অবশ্যই ভালো দিক না। সরকারেরও এ বিষয়ে আরো বেশি দৃষ্টি দেয়া উচিত। কারণ সিনেমার মতো একটা বড় ইন্ডাস্ট্রি এভাবে দিনের পর দিন কেন লোকসান গুনবে? কেন বাইরের সিনেমা দেশের প্রেক্ষাগৃহে দর্শকরা দেখবে? কলকাতার সিনেমা এখানে না চালিয়ে সিনেমা হলে তো পুরানো অনেক ভালো ছবিও চালানো যায়। সত্যিই জানি না সামনে আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে।