ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা : আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছেন গ্রামবাসী

281

ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা শুরুর পর শ্রীপুরের সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলোর বাসিন্দারা আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এরইমধ্যে এক হাজারেরও বেশি গ্রামবাসী নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এলাকা ছেড়েছেন। স্থানীয় পুলিশকে উদ্ধৃত করে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা খবরটি জানিয়েছে।
বছরের শুরু থেকেই ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে থেমে থেমে প্রচ- রকমের গোলাগুলি ও শেল হামলা চলছে। উত্তরাঞ্চলীয় বারামুল্লাহ জেলার ডেপুটি কমিশনার নাসির আহমদ নাকাশ আল জাজিরাকে বলেন, ২০০৩ সালে দুইপক্ষের অস্ত্রবিরতির পর উরি এলাকার পরিস্থিতি অনেকটা সময় ধরে শান্ত থাকলেও সম্প্রতি সেখানে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন হতে দেখা যাচ্ছে। জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন হামলায় কেবল ভারতের ১৫ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এরমধ্যে বেসামরিক নাগরিকও রয়েছে। নাকাশ বলেন, ‘শেল হামলার কারণে ১ হাজারের বেশি গ্রামবাসী তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। শ্রীনগর থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরবর্তী চুরুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা নাজির আহমদ শনিবার তার ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। পরিবারের সদস্যরাসহ সরকারের পরিচালনাধীন একটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। অনেকে আবার আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
আল জাজিরাকে নাজির আহমদ বলেন, ‘বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ওপাশ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং বেশিরভাগ গ্রামবাসী তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে শুরু করেন।’
উরি সেক্টরের আরেক ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম শিয়ালকোট। এখানকার বাসিন্দা গোলাম নবী। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি আমরা। জীবনের জন্য হুমকি তৈরি করে শেল আর বুলেটের মধ্যে থাকার ইচ্ছে আমাদের নেই।’
সীমান্তবর্তী শহর রাজৌরির প্রশাসনিক কর্মকর্তা শহিদ ইকবাল চৌধুরী বলেন, ‘গত বছরের মে মাস থেকে অস্ত্রবিরতির লঙ্ঘন চলছে। তবে চলতি বছরের জানুয়ারিতে এর মাত্রা হঠাৎ করে বেড়েছে। আতঙ্কে ৬০০-রও বেশি মানুষ ক্যাম্পে বসবাস করছেন।’
উল্লেখ্য, জম্মুর সুঞ্জওয়ানের একটি সেনাঘাঁটিতে হামলাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বেড়ে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক উত্তেজনার কারণে সীমান্ত সংলগ্ন চুরুন্ডা, শিয়ালকোট এবং তিলাওয়ারি গ্রাম সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সীমান্তে অস্ত্রবিরতির লঙ্ঘন এবং হত্যাকা-ের জন্য ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই পরস্পরকে দায়ী করে থাকে।