ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা কমাতে আলোচনায় বসছে যুক্তরাষ্ট্র

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে কূটনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। উত্তেজনা প্রশমন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বুধবার (৩০ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ওয়াশিংটন উভয় পক্ষকে উত্তেজনা কমাতে আহ্বান ট্যামি ব্রুস সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা উভয় পক্ষের সাথে যোগাযোগ করছি এবং স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি, যেন কেউ পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে না করে।” তিনি বলেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বিশ্বাস করেন কূটনীতির নেতৃত্ব নেওয়া উচিত। ব্রুস বলেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী অন্যান্য জাতীয় নেতা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীদেরও ‘এই বিষয়ে দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে উৎসাহিত করেছেন’।”

ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগামে সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলার পর দুই পারমাণবিক-সশস্ত্র প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। ২২ এপ্রিল সংঘটিত ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক ছিলেন। ফলে ২০০০ সালের পর থেকে এই অঞ্চলের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাগুলোর মধ্যে এটি একটি।

২৩ এপ্রিল ভারত একতরফাভাবে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করে, যা বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ পানিবণ্টন চুক্তি, যা দুই দেশের মধ্যে অসংখ্য সংঘাতের পরেও টিকে আছে। পরের দিন, পাকিস্তান ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি স্থগিত রাখার এবং ভারতীয় বিমানের জন্য তার আকাশসীমা বন্ধ করার হুমকি দিয়ে প্রতিশোধ নেয়। ভারতের দাবি, এই হামলায় আন্তঃসীমান্ত সংযোগ জড়িত থাকতে পারে, যদিও তারা কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ সরবরাহ করেনি। বিপরীতে, পাকিস্তান দৃঢ়ভাবে এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ সত্য উদঘাটনের জন্য ঘটনার স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে, পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার আজ বুধবার ভোরে সতর্ক করে বলেছিলেন, ইসলামাবাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে যে, ভারত পহেলগাম হামলাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে সামরিক হামলা চালাতে পারে। মন্ত্রী ভারতের এমন পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলেন, ভারত এই অঞ্চলে ‘বিচারক, জুরি এবং জল্লাদের স্ব-নির্ধারিত ভূমিকা’ গ্রহণ করছে। নয়াদিল্লির এমন ভূমিকাকে ‘বেপরোয়া ও অস্থিতিশীলকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ইসলামাবাদ। তিনি সংযম ও আঞ্চলিক শান্তির আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, পাকিস্তান নিজেই সন্ত্রাসবাদের কারণে প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এই ধরনের সহিংসতার যন্ত্রণা ও পরিণতি বোঝে।