ভারত-চীনের মধ্যে পাঁচ বছর পর সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালু

পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর আজ (রোববার) থেকে সরাসরি বিমান যোগাযোগ পুনরায় চালু হয়েছে ভারত ও চীনের মধ্যে। এই পদক্ষেপকে বাণিজ্যিক সুবিধা বৃদ্ধি এবং দুই এশীয় মহাশক্তির মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কলকাতা থেকে এএফপি জানায়, ভারতীয় এয়ারলাইন ‘ইন্ডিগো’ কলকাতা থেকে প্রথমবারের মতো দৈনিক ফ্লাইট পরিচালনা করবে। স্থানীয় সময় রাত ১০টায় প্রথম ফ্লাইটটি গুয়াংঝুর উদ্দেশে রওনা হবে। নভেম্বর থেকে নয়া দিল্লি, সাংহাই ও গুয়াংঝুর মধ্যেও ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে।

বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দুটি প্রতিবেশী দেশ এখনও কৌশলগতভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী। ২০২০ সালের সীমান্ত সংঘর্ষের পর সম্পর্ক খারাপ হলেও, গত বছরের রাশিয়া সফর ও চীনের সঙ্গে শীর্ষ বৈঠকের পর ধীরে ধীরে সম্পর্ক উন্নতির兆 দেখা দিয়েছে।

ভারত সরকার আশা করছে, সরাসরি ফ্লাইট চালু হলে দু’দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়বে এবং দ্বিপাক্ষিক লেনদেন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে। ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি রাজীব সিং বলেন, এটি পণ্য পরিবহণ ও যাত্রার সময় কমাবে, ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য সুবিধা হবে।

কলকাতার সঙ্গে চীনের শত বছরের পুরনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক রয়েছে। বৃটিশ শাসনের সময় চীনা ব্যবসায়ীরা এখানে বসবাস করতেন। স্থানীয় চায়নাটাউনের নেতা চেন খোই কুই বলেন, “চীনে যাদের আত্মীয়-স্বজন আছে, তাদের জন্য এটি দারুণ খবর। আকাশপথের সংযোগ বাণিজ্য, পর্যটন ও ব্যবসায়িক যোগাযোগ বাড়াবে।”

তবে দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জও আছে। ভারতের চীনের সঙ্গে বাণিজ্যে বড় ঘাটতি রয়েছে, এবং দেশটি শিল্প ও রপ্তানির জন্য চীনের কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল। একই সময়ে চীনে ভারতের রপ্তানি কম থাকলেও গত বছর তুলনায় ৩৪ শতাংশ বেড়েছে।

সীমান্ত সংঘর্ষ ও করোনার কারণে গত বছর প্রতি মাসে প্রায় ৫০০টি ফ্লাইট বাতিল হয়েছিল। ভারত চীনা বিনিয়োগে বিধিনিষেধ আরোপ এবং কিছু চীনা অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছিল। তবে সম্প্রতি উভয় দেশ হিন্দু ধর্মালম্বীদের উৎসব ‘দিওয়ালি’-তে একে অপরকে উপহার দিয়ে সৌহার্দ্যের ইঙ্গিত দিয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সম্পর্ক উন্নয়নের এই ধারা ওয়াশিংটনকেও একটি বার্তা দিচ্ছে। তবে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় ভারতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ এখনও বজায় রয়েছে।