ভারতের ধূমপায়ী হাতি ধাঁধাঁয় বিজ্ঞানীরা

183

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সোসাইটির (ভারত) বিজ্ঞানী বিনয় কুমার কর্নাটকের নাগারহোল বনে কাজ করার সময় ৪৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ধারণ করেছিলেন। ২০১৬ সালের এপ্রিলে ধারণা করা এক বন্য হাতির ওই ভিডিওটি বিজ্ঞানীদের ধাঁধাঁয় ফেলে দিয়েছে বলে খবর বিবিসির। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বন্য হাতিটি মুখ দিয়ে ‘ধোঁয়া’ ছাড়ছে। ‘এতদিন ভিডিওটির গুরুত্ব পুরোপুরি উপলব্ধি’ না করায় তিনি এর আগে ভিডিওটি প্রকাশ করেননি বলে বিবিসিকে বলেছেন বিনয়। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ওই হাতিটি কেন ছাই ঝাড়ছে সে বিষয়টি তাদের কাছে পরিষ্কার নয়।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সোসাইটি (ভারত) এক বিবৃতিতে বলেছে, জানামতে এ ধরনের আচরণ করা কোনো বন্য হাতির প্রথম ভিডিও-ডকুমেন্টেশন এটি, এ ঘটনায় বিজ্ঞানীরা ধাঁধাঁয় পড়েছেন। বিনয় জানিয়েছেন, ভোরে তিনি ও তার দল বাঘের ছবি নেওয়ার জন্য পেতে রাখা ক্যামেরা ফাঁদ পর্যবেক্ষণ করতে বনে গিয়েছিলেন। তখনই প্রায় ৫০ মিটার দূরে ওই মাদি হাতিটিকে দেখতে পান তিনি। হাতিটিকে দেখার পর নিজের কাছে থাকা ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করতে শুরু করেন। হাতিটিকে দেখে বনে জ¦ালানো আগুনে পোড়া কাঠ থেকে ‘কয়লা তুলে খাচ্ছে’ এবং ‘কয়লা থেকে ছাই ঝাড়ছে’ মনে হয়েছে বলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সোসাইটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে। কুমার বলেছেন, ওই দিন আমরা যা দেখেছি তাতে মনে হয়েছে হাতিটি ধূমপান করছে, সে তার শুঁড় দিয়ে অনেকগুলো ছাই তুলে মুখের কাছে নিয়ে সেগুলো ফু দিয়ে উড়িয়ে দিচ্ছিল যা ধোঁয়ার মতো দেখাচ্ছিল!
হাতি বিশেষজ্ঞ জীববিজ্ঞানী বরুন আর. গোস্বামী ভিডিওটি পরীক্ষা করে বলেছেন, “খুব সম্ভবত হাতিটি কাঠ কয়লা খাওয়ার চেষ্টা করছিল, বনের জ¦লে যাওয়া ভূমি থেকে তাকে কিছু তুলতে দেখা গেছে, শুঁড় দিয়ে তোলা উপাদানগুলো থেকে ছাইগুলো উড়িয়ে দিয়ে বাকীটা খেয়ে নিয়েছে সে। বিষ শুষে নেওয়ার উপকরণ হিসেবে কয়লার ভাল স্বীকৃতি আছে, এটার মধ্যে পুষ্টি উপাদান তেমন কিছু না থাকলেও ঔষধীগুণ থাকায় বন্য প্রাণীরা হয়তো এতে আকৃষ্ট হয়। কয়লা কোষ্ঠ সাফের কাজও করতে পারে, এভাবে প্রাণীদের বহুমাত্রিক প্রয়োজনে এটি কাজে লাগে। সাধারণত দাবানল, বজ্রপাত ও নিয়ন্ত্রিত আগুনের মাধ্যমে পোড়া থেকে প্রাণীরা কয়লা সংগ্রহ করে গলাধঃকরণ করে।