তবে ওবামা মনে করেন, বিশ্বে এখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের অনুপস্থিতি দেখা দিয়েছে। সাবেক এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিশ্বে আমেরিকান নেতৃত্বের অনুপস্থিতি তৈরি করে এ প্রশাসন গুটিকয়েক দেশের সঙ্গে যোগ দিয়েছে যারা ভবিষ্যতকে প্রত্যাখ্যান করছে। তারপরও আমি একটি ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। আমি আশা করি আমাদের অঙ্গরাজ্যগুলো, বিভিন্ন শহর এবং ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো এ চুক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোর পদক্ষেপ নেবে এবং আমরা পৃথিবীকে যেমন করে পেয়েছি তেমন করেই তা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সুরক্ষিত রাখবে।’
প্যারিস চুক্তি যখন স্বাক্ষরিত হয় তখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন জন কেরি। ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বৃহস্পতিবার তিনিও একটি বিবৃতি দিয়েছেন। ট্রাম্পের এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের অন্যতম আত্মঘাতী কর্মকা- বলে অভিহিত করেছেন কেরি। তিনি বলেন, ‘ট্রাম্প মানবতার অস্তিত্বের বড় সংকট থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন।’ প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশের বিপন্নতার প্রেক্ষিতে গত বছরের ডিসেম্বরে প্যারিসে কপ ২১ নামের একটি সম্মেলনে প্রথমবারের মতো একটি জলবায়ু চুক্তির ব্যাপারে সম্মত হন বিশ্বনেতারা। যুক্তরাষ্ট্র এবং আরও ১৮৭টি দেশ ওই সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। চুক্তির আওতায় বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধির হার ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সিরিয়া ও নিকারাগুয়া ওই চুক্তির অন্তর্ভূক্ত ছিল না। গত বছর নির্বাচনি প্রতিশ্রুতিতে ট্রাম্প বলেছিলেন, নির্বাচিত হলে তিনি দেশের তেল ও কয়লা কোম্পানিকে সহায়তার উদ্যোগ নেবেন। তখন মানুষের তৈরি এই বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ‘ভাঁওতাবাজি’ বলে অভিহিত করেছিলেন ট্রাম্প। গত সপ্তাহে শিল্পোন্নত সাতটি দেশের জি-৭ সম্মেলনের চূড়ান্ত ইশতেহারে যুক্তরাষ্ট্র ব্যতিত অন্য দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্রতা হ্রাসের বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। তখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় লিখেছিলেন, ‘আমি প্যারিস চুক্তি নিয়ে ওয়াশিংটনে পৌঁছে আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।’ আর বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে দেওয়া এক ভাষণে প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে আসার ঘোষণা দিয়ে ট্রাম্প দাবি করেন, ওই চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি প্রতিবছর ৩০ হাজার কোটি ডলার কমবে। সেই সঙ্গে প্রায় ৬৫ লাখ মার্কিন জনগণ কর্মসংস্থান হারাবে। এর জায়গা চীন ও ভারত দখল করে নেবে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন ট্রাম্প।