ব্রেক্সিট নিয়ে মত পাল্টানোর সুযোগ আছে ব্রিটিশদের

316

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বিচ্ছেদ বিষয়ে মত পাল্টানোর সুযোগ আছে যুক্তরাজ্যের এমন অভিমত দিয়েছেন ইউরোপিয়ান কোর্ট অব জাস্টিসের (ইসিজে) অ্যাডভোকেট জেনারেল ম্যানুয়েল ক্যামপোস স্যানচেজ-বোরডোনা। ইইউয়ের অন্য সদস্য দেশগুলোর অনুমতি না নিয়ে যুক্তরাজ্য ব্রেক্সিট সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারবে কি না এ বিষয়ে ইসিজের রুলিং (মতামত) চেয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের ব্রেক্সিটবিরোধী একদল রাজনীতিক। যার পরিপ্রেক্ষিতে লিখিত এক বিবৃতিতে ইসিজে অ্যাডভোকেট জেনারেলের পরামর্শ প্রকাশ করে। এই মতামত আদালতের কাছে বাধ্যগত নয় (নন–বাইন্ডিং)। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অ্যাডভোকেট জেনারেলের পরামর্শ চূড়ান্ত রায়ে প্রতিফলিত হয়; ইসিজে বিষয়টি নিয়ে আরও পরে রায় দেবে। অ্যাডভোকেট জেনারেলের পরামর্শ হলো বিচ্ছেদের আনুষ্ঠানিক আবেদন বা ‘আর্টিকেল ৫০’ সক্রিয় করার দুই বছরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দেশ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারে। এ জন্য অন্য সদস্য দেশের মতামত প্রয়োজন হওয়া উচিত নয়। এমপিদের ঘোর বিরোধিতা সত্ত্বেও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বিচ্ছেদ চুক্তি পার্লামেন্টে তোলার ঠিক আগে আগেই ইইউয়ের তরফ থেকে এমন খবর এল। ইসিজের মতামত চাওয়া ব্রিটিশ রাজনীতিকেরা বলছেন, এর ফলে পরিষ্কার হলো ব্রেক্সিট থামানোর সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি। ফলে, ক্ষতিকর চুক্তি বা চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদ—এই দুইয়ের বাইরেও ভাবার সুযোগ আছে। বিচ্ছেদের এই ঘড়ির কাঁটা থামিয়ে দেওয়া সম্ভব। যুক্তরাজ্য ও ইইউ উভয় তরফ থেকে ব্রেক্সিটবিরোধী রাজনীতিকদের ওই আবেদন আদালতের আমলে নেওয়ার বিষয়ে আপত্তি করা হয়েছিল। ইসিজে সেসব আপত্তি প্রত্যাখ্যান করে। ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রধান আইনজীবী হিউবার্ট লিগ্যাল যুক্তি দিয়েছেন, সদস্য রাষ্ট্রের মতামত ছাড়াই ব্রেক্সিট বাতিলের রায় দীর্ঘ মেয়াদে গভীর অনিশ্চয়তা তৈরি করবে। এর ফলে সদস্য দেশগুলো বাড়তি সুবিধা আদায়ে বিচ্ছেদের ঘোষণা দেবে, আবার সেটি বাতিলের কৌশল নেবে। যুক্তরাজ্য সরকারের আইনজীবী বিবিসিকে বলেছেন, ব্রেক্সিট সিদ্ধান্ত বাতিলের কোনো ইচ্ছা যুক্তরাজ্যের নেই। ফলে, ইসিজের উচিত কাল্পনিক (হাইপোথেটিকেল) এই বিষয়ে রুলিংয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা। সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে এমন রুলিং চাওয়া হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর বিতর্ক শুরু হয়েছে। এদিন ব্রেক্সিট সেক্রেটারি স্টিফেন বার্কলে চুক্তি নিয়ে এমপিদের মুখোমুখি হন। স্রাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট এমপিদের মুখোমুখি হবেন। তাঁরা ব্রেক্সিট চুক্তির বিষয়ে নিজ নিজ দপ্তরের পক্ষে এমপিদের প্রশ্নের জবাব দেবেন। প্রতিদিন আট ঘণ্টা করে পাঁচ দিন সময় নির্ধারিত রয়েছে বিতর্কের জন্য। ১১ ডিসেম্বর ভোটাভুটি হবে। এমপিদের অনুমোদন পেলে ব্রেক্সিট চুক্তি কার্যকর হবে। তবে বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি সরকারি দলের অনেক এমপি এই চুক্তির বিরুদ্ধে। এ কারণে চুক্তিটি পাস হয় কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।