বোলসোনারোকে ২৭ বছরের কারাভোগ শুরুর নির্দেশ

গত নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ব্রাজিলের ডানপন্থি সাবেক প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারোকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড ভোগ করার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি আলেকজান্দ্রে ডি মোরেস এই রায় ঘোষণা করেন এবং এক্ষেত্রে আপিল করার আর সুযোগ নেই। খবর বিবিসির। ২০২২ সালের নির্বাচনে বামপন্থি প্রতিদ্বন্দ্বী লুইজ ইনাসিও লুলা ডি সিলভার কাছে পরাজয়ের পরও ক্ষমতায় থাকার জন্য ষড়যন্ত্র করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে ৭০ বছর বয়সী বোলসোনারোকে। রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় ফেডারেল পুলিশ কারাগারে তিনি সাজা ভোগ শুরু করবেন। পালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকায় গৃহবন্দি অবস্থা থেকে শনিবার তাকে কারাগারে সরিয়ে নেওয়া হয়। রোববারের শুনানিতে আদালতের দলিলে দেখা গেছে, বোলসোনারো স্বীকার করেছেন যে, তিনি তার গোড়ালির মনিটর খোলার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি অবশ্য দাবি করেছেন যে, পালানোর কোনো ইচ্ছাই তার ছিল না। ওষুধের প্রভাবে তিনি কেবল মনিটর নষ্ট করতে চাইছিলেন।
বিচারপতি মোরেস মঙ্গলবার বোলসোনারোর জন্য পূর্ণ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন। সাবেক এই প্রেসিডেন্টের চিকিৎসক দল আগেই জানিয়েছিল যে, তার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে।
গত সেপ্টেম্বরে বোলসোনারোকে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। সে সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বলেছিলেন, লুলা ডি সিলভা ও তার ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জেরাদো আলকমিনকে হত্যা এবং বিচারপতি মোরেসকে গ্রেফতার ও হত্যার পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতেন বোলসোনারো। কিন্তু ভাগ্যের ফেরে এখন বিচারপতি মোরায়েসই বোলসোনারোর বিরুদ্ধে চলা বিচার তদারকি করছেন।
তবে বোলসোনারোর ষড়যন্ত্রকে সমর্থন দেয়নি সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনী। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি কোনো ধরনের অঘটন ছাড়াই লুলা ডি সিলভা শপথ গ্রহণ করেন। কিন্তু এক সপ্তাহ পর বোলসোনারোর হাজার হাজার সমর্থক ব্রাসিলিয়ার সরকারি ভবনগুলো দখল করে নেয়। তবে নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় এবং প্রায় দেড় হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, দাঙ্গাকারীদের উসকে দিয়েছিলেন বোলসোনারো। তিনি সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপে ক্ষমতায় ফেরার পরিকল্পনা করছিলেন। বোলসোনারোর সাজা শেষ হওয়ার আট বছর পর অর্থাৎ ২০৬০ সাল পর্যন্ত কোনো সরকারি পদে প্রার্থী হওয়া থেকে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।