বিশেষ প্রকৃতির মুরগির ডিমেই সারবে ক্যান্সার!

327

অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজনের ফলাফল হলো ক্যান্সার। পৃথিবীতে দুইশ প্রকারের বেশি ক্যান্সার রয়েছে। এখন পর্যন্ত ক্যান্সারের কার্যকর কোনো ওষুধ আবিষ্কার করতে পারেনি বিজ্ঞানীরা। এ কারণে এ রোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। ক্যান্সার চিকিত্সার জন্য নিত্য নতুন গবেষণা অব্যাহত রেখেছেন চিকিত্সা বিজ্ঞানীরা। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ক্যান্সার চিকিত্সায় নতুন এক ধরনের ডিম আবিষ্কার করেছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা। বিশেষ এই ডিমকে বলা হচ্ছে ‘গোল্ডেন এগ বা সোনালি ডিম’। গবেষণার মাধ্যমে তৈরি করা বিশেষ এই ডিমে রয়েছে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন যা কিনা ক্যান্সার এবং হেপাটাইটিসের মতো দুর্লভ রোগ সারাতে কার্যকরি ভূমিকা রাখবে। এই ডিম অবশ্য কোনো কৃত্রিম ডিম হবে না, মুরগি-ই পাড়বে এই ডিম। তবে এর জন্য ঐ মুরগির মধ্যে এমন কিছু গুণাবলী যোগ করা হয়েছে যাতে থাকবে খুবই দামি কিছু প্রোটিন। জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইন্স এন্ড টেকনোলজির বায়োকেমিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটে ক্যান্সার প্রতিরোধী ডিম নিয়ে গবেষণা করা হয়। মূলত জিনগত পরিবর্তন সাধন করে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ প্রকৃতির এই মুরগি। তাদের তৈরি মুরগি যে ডিম পাড়বে তাদের উচ্চ মাত্রার প্রোটিন থাকবে যা কিনা বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার এবং হেপাটাইটিস রোগে কার্যকরি ভূমিকা রাখতে সক্ষম। বিশেষ এই ডিম তৈরির জন্য বিজ্ঞানীরা মুরগির ভ্রূণ থেকে কোষ সংগ্রহ করে তা হিউম্যান ইন্টারফেরন বেটা তৈরির কাজ করেছে। এরপর সেই হিউম্যান ইন্টারফেরন বেটা সমৃদ্ধ কোষগুলো অন্য মুরগির ভ্রূণের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়ায় তৈরি করা মুরগির সঙ্গে পরবর্তীতে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে জন্ম নেওয়া মুরগির সঙ্গে মিলিত করে জন্মানো হয় সেই বহু কাঙ্ক্ষিত মুরগি। আর সবশেষ ধাপে এই মুরগি থেকেই মিলবে ক্যান্সার প্রতিরোধী ‘সোনালি ডিম’। এক একটি ডিম ৩০ থেকে ৬০ মিলিগ্রাম প্রোটিন সমৃদ্ধ। ওষুধের দ্বারা বেশ কিছুু মুরগির শুক্রাণু জিনগতভাবে বদলে ফেলেছেন। গবেষকদের বক্তব্য, জিনের এ পরিবর্তন করতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন ‘ইন্টার-ফেরনস’ নামের দামি ওষুধ। ক্যান্সার, হেপাটাইটিস, স্কেলারোসিসের মতো রোগে আক্রান্তদের এ ওষুধ দেওয়া হয়। এ ওষুধ এতটাই দামি যে, কয়েক মাইক্রোগ্রামের দাম প্রায় হাজার ডলার। ক্যান্সার প্রতিরোধী এক একটা ডিমের দাম হবে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ডলার। গবেষণাগারে বর্তমানে ২০টি মুরগি রয়েছে। এই মুরগিগুলো প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী প্রায় প্রতিদিনই পাড়ছে একটি করে ডিম।