বিচার শুরুর আগেই সাবেক প্রেসিডেন্টকে ১৮ মাস জেলে রাখার আর্জি

433

পালিয়ে যেতে পারেন আশঙ্কায় অর্থপাচারের অভিযোগে বিচারের মুখে থাকা পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট ওলান্তা হুমালা ও তার স্ত্রীকে বিচার শুরুর আগেই ১৮ মাসে জেলে রাখার আবেদন করেছেন দেশটির এক সরকারি কৌঁসুলি। হুমালা ও তার স্ত্রী যেন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারেন, সেজন্য গত মঙ্গলবার জার্মান জুয়ারেজ নামের অ্যাটর্নি জেনারেল দপ্তরের ওই তদন্তকারী কৌঁসুলি এই আবেদন করেন। অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে করা লিখিত আবেদনে জুয়ারেজ বলেন, তার কাছে প্রমাণ আছে হুমালা দম্পতি ব্রাজিলের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান অডেব্রেখট ও ভেনিজুয়েলার সাবেক প্রেসিডেন্ট হুগো চাবেজের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ নিয়েছিলেন। এসব অর্থ হুমালা তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার এবং ব্যক্তিগত লাভের কাজে ব্যবহার করেছিলেন বলেও জুয়ারেজ অভিযোগ করেন। ব্রাজিলের ওয়ার্কার্স পার্টির অনুরোধে ২০১১ সালের নির্বাচনী প্রচারের সময় অডেব্রেখট হুমালাকে ৩০ লাখ ডলার পাঠিয়েছিল বলে কোম্পানিটির দুই শীর্ষ কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন বলে এই তদন্ত কর্মকর্তার দাবি। ওই অর্থই দুর্নীতির নমুনা, বলেন জুয়ারেজ। ২০০৬ সালের প্রচারে চাভেজ ভেনিজুয়েলার কোষাগার থেকে হুমালাকে অর্থ দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ এই তদন্ত কর্মকর্তার। চাভেজঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত হুমালা ২০০৬ সালের নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিলেন। পরের দফায় নিজেকে ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলার মত উদারপন্থি বাম পরিচয় দিয়ে ভোটারদের মন জিতেছিলেন। বিচারের আগেই জেলের মুখোমুখি হতে জুয়ারেজের আবেদনকে ‘বিস্ময়কর এবং অবমাননাকর’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন হুমালা। লিমায় নিজের বাড়ির সামনে হুমালা তার স্ত্রী নাদিন হেরেদিয়াকে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা তদন্ত কর্মকর্তাদের সব আদেশ মেনে চলছি। এই (অর্থপাচার ও ঘুষ নেওয়ার) অভিযোগের সবচেয়ে বড় অংশীদার হিসেবে তা মোকাবেলায় আমরা তদন্তে সবরকম সহযোগিতাও করে যাচ্ছি। জুয়ারেজের আবেদন নিয়ে গতকাল বুধবার বিচারক রিচার্ড কনসেপিয়নের আদালতে শুনানি হবে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বিচারক যদি আবেদনটি মঞ্জুর করেন তাহলে হুমালা হবেন পেরুর দ্বিতীয় সাবেক প্রেসিডেন্ট, অডেব্রেখটের কাছ থেকে অবৈধ অর্থ নেওয়ার অভিযোগে যার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হবে। গত বছর ব্রাজিলের ওই নির্মাণ প্রতিষ্ঠান দশককাল ধরে দক্ষিণ আমেরিকার শীর্ষ নেতাদের ঘুষ দেওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেছিল। বিচারক কনসেপিয়ন চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির আরেক সাবেক প্রেসিডেন্ট আলেজান্দ্রো টলেডোকেও অডেরব্রেখটের কাছ থেকে দুই কোটি ডলার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে বিচার শুরুর আগেই ১৮ মাস কারাবাসের আদেশ দিয়েছিলেন। টলেডো এখন যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে আছেন বলে ধারণা করা হয়। সাবেক এই প্রেসিডেন্ট অবশ্য তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।