বাবার খোঁজ মিলছে না, অভিনেত্রী প্রসূন আজাদের আকুতি
লাক্স তারকাখ্যাত অভিনয়শিল্পী প্রসূন আজাদের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা বাবা আজাদ হোসেনের খোঁজ মিলছে না। গতকাল শুক্রবার থেকে তার কোনো হদিস নেই, এমনটাই জানিয়েছেন অভিনয়শিল্পী। শনিবার (১৯ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এক ফেসবুক পোস্টে প্রসূন আজাদ লিখেছেন, ‘আমার আব্বুকে কেউ রাস্তায় বা হাসপাতালে বা যেকোনো জায়গায় দেখলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। গতকাল বিকেল চারটা থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খবর পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনও সঙ্গে নেয়নি।’
প্রসূন আজাদ ২০১২ সালে লাক্স–চ্যানেল আই সুপারস্টারের প্রথম রানারআপ হয়ে শোবিজে যাত্রা শুরু করেন। এরপর একাধিক নাটকে ও কিছু সিনেমায় নিয়মিত অভিনয় করেন। পরে হঠাৎ অভিনয় থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। সর্বশেষ গত বছর তার অভিনীত ‘পদ্মাপুরাণ’ সিনেমা মুক্তি পায়। প্রসূন এখন সংসারে বেশি মনোযোগী। দুই সন্তানের মা হয়েছেন তিনি।
প্রসূন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘আমার বাসা টিকাটুলী, আম্মু-আব্বুর মালিবাগ। দিনে অন্তত আব্বু ৫-৬ বার আমার সন্তানদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলে। ওদের সঙ্গে কথা না বলে আব্বু থাকতেই পারে না। আমার সেই আব্বু গতকাল বিকেল চারটা থেকে এখন পর্যন্ত একটা কলও দেয়নি। কোথায় আছে আমার আব্বু, আমরা কেউই জানি না। বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে তার কোনো খোঁজ নেই।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে অভিনেত্রী বলেন, ‘রাস্তায় রাস্তায় আমার আব্বুকে খুঁজছি। কোথাও যদি আব্বুর দেখা পাই। কিন্তু কই যে পাই আব্বুকে, তা বুঝছি না।’ প্রসূন আজাদের বাবা আজাদ হোসেনের চিন্তায় বাসার সবাই অস্থির, চিন্তিত।
প্রসূনের মা শাহানা বেগমও পুলিশ কর্মকর্তা, গত মাস থেকে তিনি অবসরে। প্রসূন বললেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, আব্বু হয়তো চলে আসবে বা আমরা হয়তো তাকে পেয়ে যাব। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজ নেই। আমরা এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, থানায় জানানোর।’
প্রসূন জানিয়েছেন, তার বাবা আজাদ হোসেনের উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস আছে। কিছুদিন আগে তার স্ট্রোক হয়েছে। তাই লাইফস্টাইলেও অনেক বদল আনতে হয়েছে। প্রসূন বলেন, ‘আমার আব্বুর চা খাওয়ার অভ্যাস। এ নিয়ে বাসায় খুব যস্ত্রণা দিত। তাই প্রায়ই আমার বাসায় চলে আসত অথবা লুঙ্গি পরেই আব্বু বাসার নিচে গিয়ে চা খেত। আম্মু ভেবেছে, গতকাল লুঙ্গি পরে যেহেতু বের হয়েছে, হয়তো বাসার নিচে আড্ডা দিয়ে চা খেয়ে আবার চলে আসবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার কোনো খবর নেই। এমন না, তিনি রাস্তা ভুলে যান। আমার আব্বুর কিন্তু ৫০ বছর আগের কথাও পরিষ্কার মনে থাকে। সেসব গল্পও তিনি আমাদের দুই ভাই-বোনকে শোনান।’
কারও সঙ্গে তার কোনো বিরোধ আছে কিনা বা কাউকে সন্দেহ হয় কিনা- এমন প্রশ্নে প্রসূন আজাদ বলেন, ‘আমার আব্বার কারও সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। বরং তার সঙ্গে সবারই খুব ভালো সম্পর্ক। তিনি ভীষণ প্রাণখোলা মানুষ। আড্ডা দিতে ভালোবাসেন। আমার পরোপকারী আব্বু গেল কোরবানিতেও একজন অসহায় মানুষকে নিজের টাকা দিয়ে ঘর বানিয়ে দিয়েছেন। এটা বলছি এই কারণে, সে বরাবরই খুবই পরোপকারী একজন মানুষ। জানি না, আমার সেই আব্বুটা কই আছে? কী করছে?’