বছরের প্রথম দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাঠ্য পুস্তক উৎসব

365

নতুন বছরের প্রথম দিনে সারাদেশের ন্যায় জেলায় বই উৎসব পালিত হয়েছে। আজ সকালে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, জেলা শিক্ষা অফিস ও মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আয়োজনে হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই উৎসব পালন করা হয়। একই মঞ্চে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ছাত্রছাত্রীদের বই বিতরণ করা হয়। বেলুন উড়িয়ে বই উৎসবের উদ্বোধন ও প্রধান অতিথি অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক এ জেড এম নূরুল হক। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন, পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম, নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর দাউদ হোসেন, সিভিল সার্জন ডা: এসএফএম খায়রুল আতাতূর্ক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাদের। বর্তমানে নতুন বছরের প্রথম দিনে বই তুলে দেয়া হচ্ছে যা আগে ছিলো না, সেই পুরোনো দিনের কথাগুলো তুলে ধরে পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম বলেন তোমাদের দেখে আমার হিংসে হচ্ছে। আমি বছরের শুরুতে কখনো নতুন বই পায়নি। জানুয়ারীতে বাংলা বই পেলেও অংক বই আসতে মার্চ মাস। তোমরা ভাগ্যবান। এই বইগুলো নিয়ে গিয়ে তুলে রাখলে হবে না। বই পড়তে হবে। তোমরা ভাল কিছু করবে। অভিভাবকদের ধন্যবাদ যে তারা সন্তানদের উৎসাহ দিতে এখানে নিয়ে এসেছেন। সবাইকে জ্ঞান আহরণের জন্য বই পড়ার আহ্বান জানিয়ে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর দাউদ হোসেন বলেন, আমরা যে যে লঅইনে, অনার্স, ইঞ্জনিয়ারিং, ডাক্তারি, যাই পড়ি না কেন, বই পড়তে হবে। অভিভাবকদের বলব, নিজে পড়াবেন, স্কুলে পড়াবেন। কোচিংকে না বলবেন। পড়ায় হেল্প লাগলে বিদ্যালয়ে স্যারকে বলবেন। অনুষ্ঠানে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫ উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে বইয়ের চাহিদা ছিল প্রায় ২৭ লাখ ১১ হাজার। চাহিদামতো সবগুলো বই পেয়েছি এবং উপজেলায় বিতরণ করেছি। ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫ উপজেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে বইয়ের চাহিদা দিয়েছিলাম ৯ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪৯ খানা। চাহিদামত বই পেয়েছি ও উপজেলায় বিতরণ করেছি। এই এলাকায় আদিবাসী সম্প্রদায়দের দাবি ছিল নিজের ভাষায় বই দেয়ার জন্য। এবার আমরা গোমস্তাপুর উপজেলা ও নাচোল উপজেলায় সাধ্রী ও সাঁওতাল ভাষায় ১ম, ২য় ও ৩য় শ্রেণীর চাহিদানুযায়ী ৯২৪ খানা বই আমরা পেয়েছি ও বিতরণ করা হচ্ছে। বইয়ের কোনো ঘাটতি নেই। নতুন বই পাওয়া শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা জানান নতুন বই পেয়ে ভাল লাগছে। বছরের প্রথমদিন নতুন বই পড়ার মজা আলাদা। চেষ্টা থাকবে ভাল রেজাল্ট করার। অভিভাবকদের সাথে কথা হলে তারা জানান আমাদের সময় বই কিনতে হতো সময়মতো পেতাম না। এখন আমার সন্তানরা বই পাচ্ছে বছরের শুরুতে আমার খুব ভাল লাগছে। আমার সন্তান আজ নতুন বই পেল। আমাদের দায়িত্ব অনুযায়ী তাদের সময় দিব ও পরীক্ষার প্রস্তুতি নিথে আগে সিলেবাস শেষ করব। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা: এসএফএম খায়রুল আতাতূর্ক, স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক ড. চিত্রলেখা নাজনীন, নবাবগঞ্জ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মনোয়ারা খাতুন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
এদিকে, নাচোলেও বই উৎসবের দিনে আনুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণের মধ্য দিয়ে বই উৎসব পালিত হয়েছে। নাচোল খুরশেদ মোল্লা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রধান অতিথি হিসেবে বই বিতরণ করেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিহা সুলতানা। এসময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাইফুল ইসলাম ও রুহুল আমীন, ভাইস চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, পৌর মেয়র আব্দুর রশিদ খান ঝালু, প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) দুলাল উদ্দিন খান। এদিন একযোগে উপজেলার প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও অভিভাবকদের নিয়ে শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করেন।