প্রথম সিনেমা ফ্লপ হওয়ায় অভিনয় ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম: শাবনূর

99

ঢাকাই সিনেমার সফল ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর। নব্বই দশক থেকে শুরু করে দীর্ঘসময় ধরে বড় পর্দায় রাজত্ব করেছেন তিনি। যদিও এখন সিনেমা থেকে দূরে রয়েছেন এই অভিনেত্রী।  প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক এহতেশাম পরিচালিত ‘চাঁদনী রাতে’ দিয়ে ১৯৯৩ সালে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে শাবনূরের। সেই থেকে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকাদের একজন তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বহু সুপারহিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন শাবনূর। কিন্তু তার শুরুটা এত মসৃণ ছিল না। জীবনের প্রথম সিনেমাতেই এই অভিনেত্রী হয়েছিলেন ব্যর্থ! যার কারণে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি এবং ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন রূপালি জগত। বহুদিন আগে বাংলাদেশ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই অভিনেত্রী।

সম্প্রতি নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পুরোনো সেই সাক্ষাৎকারের ভিডিও শেয়ার করেছেন শাবনূর। এতে তাকে অকপটেই কথাগুলো বলতে দেখা যায়।

সাক্ষাৎকারে উপস্থাপিকা শাবনূরের কাছে জানতে চান, তার প্রথম সিনেমা ‘চাঁদনী রাতে’ ফ্লপ হাওয়ার পরও অতি অল্প সময়ে কীভাবে একজন সফল প্রতিষ্ঠিত নায়িকা হয়ে উঠলেন।

উত্তরে শাবনূর বলেন, ‘আমার প্রথম ছবিটা খারাপ যাওয়ায় আমি খুব ভেঙে পড়েছিলাম। আমি আর ছবিটবি করবো না বলে সিদ্ধান্ত নিই। তখন দাদু (এহতেশাম) আমাকে উৎসাহ দিলেন। আমার বাবা-মাও বললেন, প্রথমটা খারাপ গিয়েছে তাতে কী হয়েছে। পরবর্তী যে ছবিগুলো তুমি সাইন করেছ, সেগুলো রিলিজ হোক, দেখো। তারপর পরবর্তী সিনেমা ‘দুনিয়ার বাদশাহ’ রিলিজ হলো। তখন সেটা মোটামুটি হিট করলো এবং আমার উৎসাহটা একটু বাড়ল। এরপর ‘তুমি আমার’ ও ‘সুজন সখি’সহ আরও বেশকিছু সিনেমা মুক্তি পেল। এগুলোর একটাও ফ্লপ হয়নি। মোটামুটি হিট হয়, আর সেখান থেকেই উৎসাহটা আমার আরও বেড়ে যায় এবং আমি তখন থেকেই সিনেমা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। ’

সিনেমায় আসা প্রসঙ্গে শাবনূর বলেন, ‘ছোটবেলা অনেক নায়ক-নায়িকাদের দেখতাম পর্দায় গান করছেন, নাচ করছেন। তখন আমারও দেখে দেখে ইচ্ছা হলো, পর্দায় আমারও তাদের মতো হতে। কথায় কথায় আমার বাবা একদিন এহতেশাম দাদুকে (প্রয়াত পরিচালক এহতেশাম) বলেছিলেন, আমার মেয়ে চলচ্চিত্রে আসার ব্যাপারে আগ্রহী। উনি ছিলেন আমার বাবার বন্ধু। ওনারা একসঙ্গে মাছ মারতেন। দাদু বললেন, আপনার মেয়েকে একদিন নিয়ে আসেন। এরপর দাদু আমাকে প্রথম দেখেই বললেন, পেয়ে গেছি, তুমি আমার সিনেমার নায়িকা! সেদিন আমি একটা সবুজ শাড়ি পরেছিলাম। ’

শাবনূরের প্রকৃত নাম কাজী শারমিন নাহিদ নূপুর। তিনি ১৯৯৪ সালে পরিচালক শাহ আলম কিরণের ‘রঙিন সুজন সখী’-তে অভিনয়ের পর ১৯৯৫ সালে ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ১৯৯৬ সালে ‘স্বপ্নের পৃথিবী’ ও ‘তোমাকে চাই’, ১৯৯৭ সালে ‘আনন্দ অশ্রু’-তে অভিনয় করে তারকা খ্যাতি পান। পরে রিয়াজের সঙ্গে জুটি হয়ে ‘মন মানে না’ ও ‘তুমি শুধু তুমি’, ‘ভালোবাসি তোমাকে’ ও ‘বিয়ের ফুল’-এ অভিনয় করেন তিনি। সিনেমাগুলো দর্শকপ্রিয় হয়।

সালমান শাহ ও রিয়াজ ছাড়া ওমর সানী, ফেরদৌস, অমিত হাসান, আমিন খান ও বাপ্পারাজের সঙ্গে অভিনয় করে সফলতা পান শাবনূর।

শাবনূর ২০০৫ সালে ‘দুই নয়নের আলো’ সিনেমার জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। গত বছর স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয় শাবনূরের। একমাত্র সন্তান আইজান নিহানকে নিয়ে বর্তমানে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায়।