প্রত্যাহার হচ্ছেন কু‌ড়িগ্রামের ডি‌সি, বিভাগীয় ব্যবস্থা

119

সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে মধ্যরাতে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।  একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

‌রোববার (১৫ মার্চ) দুপুরে স‌চিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্র‌তিমন্ত্রী এ কথা জানান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তার (ডিসি) বিরুদ্ধে তদন্তে অনিয়ম ও অসঙ্গতির প্রমাণ মিলেছে। তাকে কুড়িগ্রাম থেকে প্রত্যাহার করা হবে। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অপরাধ করলে শাস্তি পেতে হবে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কাউকে ছাড় দেওয়ার প্রশ্ন নেই। অপরাধ অনুযায়ী শাস্তি হবে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে কোনো রাখঢাক করা হবে না।’

বিকেলের মধ্যে প্রত্যাহারের একটি আদেশ হাতে পাওয়া যেতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নিজে। তিনি ইতিমধ‌্যে এ বিষয়ে শুনেছেন এবং তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। আশা করছি, বিকেলের মধ্যে প্রত্যাহারের একটি আদেশ হাতে পাব।’

বিভাগীয় কমিশনারের তদন্তের খসড়া প্রতিবেদন হাতে এসেছে জানিয়ে ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘তদন্তে ডিসির কার্যক্রমে বেশ কিছু অসঙ্গতি পাওয়া গেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। আইন না মেনে মধ্যরাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা, প্রশাসন সম্পর্কে জনগণকে ভীতির জায়গায় নিয়ে যাওয়া। অহেতুক ঝামেলা সৃষ্টি করায় জনমনে বিরূপ ধারণা জন্ম দিয়েছে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসকের এমন কাজে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। অধীনস্তরা বসের নির্দেশনায় কাজ করে। এক্ষেত্রে তাদের কোনো গাফিলতি আছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতিমধ‌্যে পাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বলে দিয়েছি, জনস্বার্থের জন্য যেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। যাতে কোনো প্রকার বিতর্ক সৃষ্টি না হয় সেদিকে সতর্কদৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।’

সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম ক্ষতিপূরণের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি ইতোমধ্যে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। যেহেতু প্রতিবেদনে সব উল্লেখ করা আছে এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি তাই তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন বলে আশা করছি।’

প্রসঙ্গত, ১৩ মার্চ দিনগত মধ্য রাতে কুড়িগ্রাম ডিসি অফিসের দুই-তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট, ১৫-১৬ জন আনসার সদস‌্য গিয়ে সাংবাদিক আরিফুলকে বাসা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। ডিসি অফিসে নেওয়ার পর তারা দাবি করেন, আরিফুলের বাসায় আর্ধেক বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে। আরিফুলকে রাতেই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এক বছরের সাজা দেওয়া হয়।