পুশব্যাক নয়, নিয়ম মেনে ফেরত পাঠানো হবে অবৈধ ভারতীয়দের: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ভারত থেকে পুশইনের মাধ্যমে আসা ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশি থাকলে তাদের পুশব্যাক করার সুযোগ নেই। তবে ভারতীয় নাগরিক ও দেশটির রোহিঙ্গারা থাকলে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় ফেরত পাঠানো হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ সুন্দরবনে বিজিবির বয়েসিং ভাসমান বিওপি উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ মন্তব্য করেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতে কোনো অবৈধ বাংলাদেশি থেকে থাকলে তাদের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় ফেরত পাঠাতে হবে। ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা হয়েছে। ভারতের কাছে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। বলেছি, পুশইন না করে প্রোপার চ্যানেলে পাঠাতে।

ভারতের পুশইনকে উসকানি হিসেবে দেখছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয়দের পুশব্যাকের চিন্তা নেই। প্রোপার চ্যানেলে পাঠাব। এ সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, যেখানেই পুশইনের চেষ্টা হচ্ছে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করা হচ্ছে। পুশইন রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, পুশইনের ফলে জঙ্গি-সন্ত্রাসী দেশে ঢোকার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এরা যাতে ঢুকতে না পারে সে প্রত্যাশা করব।

সুন্দরবনের জলসীমান্ত সুরক্ষায় বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী রায়মঙ্গল নদী ও বয়েসিং খালের সংযোগস্থলে বিজিবির এই ভাসমান বিওপিটি উদ্বোধন করা হয়েছে‌। বিজিবির যশোর রিজিয়নের আওতাধীন রিভারাইন বর্ডার গার্ড (আরবিজি) কোম্পানির দায়িত্বপূর্ণ জলসীমান্তের সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিতে এটি উদ্বোধন করা হয়।বিজিবি সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ-ভারতের ৪ হাজার ১৫৬ কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে ১৮০ কিলোমিটার নদীঘেরা। এর মধ্যে প্রায় ৭৯ কিলোমিটার এলাকা সুন্দরবনের অন্তর্গত।

বিজিবি আরও জানায়, সুন্দরবনের গহীন অরণ্যের দুর্গম এই সুদীর্ঘ জলসীমান্তের সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। নানা প্রতিকূলতা ও অন্যান্য সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বিজিবির রিভারাইন বর্ডার গার্ড কোম্পানি একটি স্থল বিওপি, ২টি ভাসমান বিওপি, একটি জাহাজ ও কিছু সংখ্যক জলযানের মাধ্যমে সীমান্ত সুরক্ষার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এর মধ্যে কৈখালী বিওপি ও কাঁচিকাটা ভাসমান বিওপির মধ্যকার দূরত্ব ৩০ কিলোমিটারেরও বেশি। ফলে মধ্যবর্তী বয়েসিং নামক স্থানে আরেকটি ভাসমান বিওপি স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় বয়েসিং খালে এই ভাসমান বিওপি স্থাপন করা হয়েছে।

বিজিবি সূত্রে জানা যায়, বয়েসিং খালে স্থাপনকৃত বিজিবির তৃতীয় বর্ডার অবজারভেশন পোস্টের (বিওপি) দুজন অফিসারের নেতৃত্বে ৩৫ জন বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। এর মাধ্যমে রায়মঙ্গল নদী ও বয়েসিং খাল দিয়ে নারী ও শিশু পাচার, মাদকসহ বিভিন্ন পণ্য চোরাচালান প্রতিরোধ, অবৈধভাবে বিদেশি জাহাজ চলাচলসহ সুন্দরবনের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করতে নজরদারি করা হবে।