পুতুলনাচের ইতিকথা’র অভিনেত্রী মারা গেছেন

টালিপাড়ায় নেমেছে শোকের ছায়া। চলে গেলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী ভদ্রা বসু। গভীর রাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। শনিবার সকালে নিমতলা ঘাটে সম্পন্ন হয় তার শেষকৃত্য। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’সিনেমায় অভিনয় করে তিনি সবার হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। পরিবার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি গলব্লাডারে স্টোন ধরা পড়ে ভদ্রার। অতিরিক্ত রক্তচাপ ও হৃদরোগের সমস্যার কারণে অস্ত্রোপচার সম্ভব হয়নি। ওষুধের মাধ্যমেই চিকিৎসা চলছিল। হঠাৎই বাড়িতে পড়ে গিয়ে তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পান। দ্রুত তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে নেওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে, যেখানে তার মস্তিষ্কে জটিল অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেসে আরও একটি বড় অপারেশন হয়। মাঝে কিডনির সমস্যাও দেখা দেয়। সব চেষ্টা ব্যর্থ করে শুক্রবার রাতে শেষ হয়ে যায় অভিনেত্রীর লড়াই। প্রখ্যাত নাট্যনির্দেশক ও অভিনেতা অসিত বসুর স্ত্রী ছিলেন ভদ্রা বসু। অভিনয় ও নাট্যদুনিয়ায় সমানভাবে দক্ষ ছিলেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ে সুমন মুখোপাধ্যায়ের ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ এবং অনিলাভ চট্টোপাধ্যায়ের ‘বেলা’ ছবিতে অভিনয় করেছেন। ‘বেলা’ই ছিল তার শেষ সিনেমা। নাট্যচর্চাতেও তিনি ছিলেন অত্যন্ত সক্রিয়।

তার পরিচালিত নাটক ‘গওহরজান’ দর্শক-সমালোচকদের বিশেষ প্রশংসা কুড়িয়েছিল। অভিনেত্রীর দুই মেয়ে-দামিনী বসু ও আনন্দী বসু-নিয়মিত মঞ্চে অভিনয় করেন। মায়ের মৃত্যুতে শোকের সাগরে ভাসছেন তারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেই দুঃসংবাদটি জানান দামিনী। অভিনেত্রীর মৃত্যুতে টলিউডে নেমেছে গভীর শোক। অভিনেতা সোহন বন্দ্যোপাধ্যায় স্মৃতিচারণ করে লিখেছেন, “আর তো কেউ বলবে না-পাকামি করিস না, কানটা মুলে দেব। শোক প্রকাশ করেছেন অভিনেতা রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি লিখেছেন, “মননে কিশোরী এক অভিনেত্রীকে হারালাম। মঞ্চ ও পর্দায় সমান উজ্জ্বল এই অভিনেত্রীকে হারিয়ে শোকার্ত শিল্পীসমাজ ও অনুরাগীরা। টালিপাড়ায় আজ যেন এক নিরবচ্ছিন্ন শূন্যতা।