পাকিস্তানে স্কুল বাসে বোমা হামলা, শিশুসহ নিহত ৫
পাকিস্তানের বেলুচিস্তান অঞ্চলে একটি স্কুল বাসে বোমা হামলায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং কয়েক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। খবর বিবিসির। পুলিশ বিবিসিকে জানিয়েছে, স্থানীয় সময় আজ বুধবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে প্রত্যন্ত শহর খুজদারে ওই হামলার সময় বাসটিতে প্রায় ৪০ জন স্কুল শিশু ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত পাঁচজনের মধ্যে তিনজনই শিশু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে একটি বড় বাসের পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ দেখা গেছে, যার পাশে স্কুলব্যাগ পড়ে রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমের একটি অশান্ত প্রদেশ বেলুচিস্তান দীর্ঘদিন ধরেই বিদ্রোহ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি এই হামলাকে ‘স্পষ্ট বর্বরতা’ বলে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। শিশুদের লক্ষ্য করে হামলাকারীদেরকে তিনি ‘পশু’ অভিহিত করেছেন, যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রতিবেশী ভারত ও বেলুচিস্তানের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরণের পরিকল্পনার অভিযোগ করেছে, যদিও এর কোনো প্রমাণ নেই। এর আগে মার্চের শুরুতে, বেলুচিস্তানের প্রত্যন্ত সিবি জেলায় একটি ট্রেনে হামলা চালিয়ে যাত্রীদের জিম্মির ঘটনা ঘটেছিল। ওই হামলায় প্রায় ২১ জন বেসামরিক ব্যক্তি এবং চারজন সামরিক কর্মী নিহত হয়েছিল।
হামলাটি চালায় বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ), একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী যারা স্বাধীনতা অর্জনের জন্য কয়েক দশক ধরে বিদ্রোহ চালিয়ে আসছে। পাকিস্তানের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি পশ্চিমা দেশ বিএলএকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনোনীত করেছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বিএলএলকে ‘ভারতের প্রক্সি গোষ্ঠী’ হিসেবে অভিযুক্ত করেছে। তবে বিএলএ এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। বিএলএল উল্টো পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীকে তাদের নৃশংসতার জন্য অভিযুক্ত করেছে।
বিএলএল বলেছে, গত দুই দশকে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী হাজার হাজার জাতিগত বালুচ মানুষকে নিখোঁজ করেছে। অভিযোগ রয়েছে যে, তাদের যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই আটক করা হয়েছে, অথবা কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের বিরুদ্ধে অভিযানে অপহরণ, নির্যাতন এবং হত্যা করা হয়েছে।