পাকিস্তানের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে নারী-পুরুষ মেলামেশায় নিষেধাজ্ঞা

265

ক্যাম্পাসে নারী-পুরুষের মেলামেশা নিষিদ্ধ করেছে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের এক বিশ্ববিদ্যালয়। নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গকারীদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে বলেও হুঁশিয়ার করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ‘শিক্ষার মান বজায় রাখা’র কথা বলে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও প্রশাসনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা দ্য নেশন পত্রিকার কাছে দাবি করেছেন, ধর্মভিত্তিক এক ছাত্র সংগঠনের চাপ কাজ করেছে এই নিষেধাজ্ঞার পেছনে। দ্য নেশন জানায়, গত শুক্রবার খাইবার পাখতুনখোয়ার হাজারা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জারি করা প্রজ্ঞাপনের ব্যাপারে জানা যায়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রত্যক্ষ করেছে যে শিক্ষার্থীরা প্রায়ই জমায়েত করছে, নারী-পুরুষ একসাথে হচ্ছে এবং নিয়মিত ক্লাস করছে না। যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী, ক্যাম্পাসে নারী-পুরুষের একত্র হওয়া পুরোপুরি নিষিদ্ধ। সবার কাছ থেকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা কামনা করছি।’ দ্য নেশনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কেবল সব বিভাগেই প্রজ্ঞাপনই জারি করে থেমে থাকেনি, ‘আদেশটি বাস্তবায়নের জন্য’ বিভিন্ন জায়গায় বোর্ড স্থাপন করে সেখানেও প্রজ্ঞাপনের কপি জুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।’
ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়টি নারী-পুরুষের সহপাঠের প্রতিষ্ঠান। এখানে প্রশাসন হঠাৎ করে নারী-পুরুষের একত্র হওয়াকে নিষিদ্ধ করে দেওয়ার কারণে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নিপীড়নের অভিযোগ উঠতে পারে এবং বিশ্ববিদ্যালয়টি নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হতে পারে।’ অন্য এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য নেশনকে বলেন, একটি ধর্মীয় ছাত্র সংগঠনের চাপে প্রশাসন এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ওই ছাত্র সংগঠনটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পসে লিঙ্গ বৈষম্য বজায় রাখতে চায়। প্রক্টোরিয়াল বোর্ডের সাবেক এক কর্মকর্তা দ্য নেশনকে বলেন, ‘ক্যাম্পাসে নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীকে একসঙ্গে দেখলে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাবা-মাকে ডেকেওই শিক্ষার্থীদের বিয়ে পড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও প্রদর্মন করতে বলা হয়েছে।’ ওই কর্মকর্তা জানান, এ নীতির বিরোধিতা করায় জ্যেষ্ঠ একজন প্রক্টোরিয়াল বোর্ড সদস্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীরা কিভাবে একত্র হয়েছেন তা বিবেচনায় নিয়ে শাস্তির ধরনটাও ভিন্ন ভিন্ন রকমের হতে পারে। তাদেরকে যদি দরবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায় তবে ২০০ রুপি জরিমানা হবে। আর একজন পুরুষ ও একজন নারী শিক্ষার্তী যদি একসঙ্গে বসে থাকেন তবে তাদের বিরুদ্ধে ৫,০০০ রুপি জরিমানা করবে কর্তৃপক্ষ।