পরিসংখ্যান ও রেকর্ডের পাতায় মুশফিক

গুঞ্জন ছিল বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আরও এক বছর থাকতে যাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। বোঝায় যাচ্ছে ক্রিকেট বোর্ডের তরফ থেকে অবসরের ব্যাপারে মুশফিকে উপর কোন চাপ ছিল না। তবে বুধবার (৫ মার্চ, ২০২৫) রাতে মুশফিক জানিয়ে দিলেন রঙিন পোষাকে অনেক হয়েছে, আর না। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দেওয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেকেই বেছে নিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটেরর মিস্টার ডপেন্ডেবল। এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সাদা বলের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত সঙস্করণ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন এই ডানহাতি কিপার ব্যাটসম্যান।

২০০৬ সালের ৬ আগস্ট জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারেতে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিল মুশফিকের। বিদায়বেলায় ওয়ানডে পরিসংখ্যান ও মাইলফলকের রঙিন পাতা গুলো একনজর উল্টিয়ে দেখা যাক। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে খেলা ক্রিকেটার মুশফিক। মিস্টার ডিপেন্ডেবল ২৭৪টি ওডিয়াই খেলেছেন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সাকিব আল হাসান খেলেছেন ২৪৭টি ম্যাচ। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না আসলেও বাংলাদেশের জার্সিতে সাকিব তার শেষ ওডিয়াই খেলে ফেলেছেন। এখন জাতীয় দল থেকে অবসরে যাননি এবং ২০০ বেশি ওডিয়াই খেলা ক্রিকেটার আছেন কেবল মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তিনি খেলেছেন ২৩৯ ম্যাচ। ওডিআইতে উইকেটকিপার হিসেবে মুশফিকের ডিসমিসাল সংখ্যা ২৯৭টি, ২৪১টি ক্যাচের সাথে করেছেন ৫৬টি স্টাম্পিং। অন্যদিকে ১২৬টি ডিসমিসাল নিয়ে বাংলাদেশের জার্সিতে পরের নামটি খালেদ মাসুদ পাইলটের। ওডিআই ইতিহাসে ডিসমিসাল সংখ্যায় মুশফিক আছেন পাঁচ নম্বরে। এ ছাড়া সাধারণ ফিল্ডার হিসেবে আরও ২টি ক্যাচ নিয়েছেন মুশফিক। ওয়ানডেতে মুশফিকের রান সংখ্যা ৭৭৯৫। বাংলাদেশের হয়ে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। শীর্ষে থাকা তামিম ইকবাল করেছেন ৮৩৫৭ রান। এই ওডিয়াই সংস্করণে ২০০৬ সালের ৬ আগস্ট অভিষিক্ত মুশফিকের ক্যারিয়ারের বয়স ১৮ বছর ২০২ দিন। যা বাংলাদেশের জন্য রেকর্ড। সব দেশ মিলিয়ে অষ্টম এই রেকর্ডটি আছে অষ্টম নম্বরে। টাইগারদের হয়ে এই পরিসংখ্যানের দ্বিয়ীয় স্থানে আছেন ১৭ বছর ২১৪ দিন ধরে খেলে যাওয়া রিয়াদ। মুশফিক ওয়ানতে সিরিজসেরা হয়েছেন ৬ বার। শীর্ষে থাকা সাকিব ৭ বার সিরিজসেরা হয়েছিলেন। তবে একটা জায়গায় সবার উপরে মুশি। উইকেটকিপার হিসেবে সিরিজসেরা হওয়ার দৌড়ে পুরো বিশ্বেই সবার ওপরে তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক ও ভারতের মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে রেকর্ডটা ভাগাভাগি করছেন মুশফিক। ওডিয়াইতে দুবার এক ম্যাচে ৫টি ডিসমিসাল করেছেন মুশফিক। যা বাংলাদেশের রেকর্ড। অন্যদিকে খালেদ মাসুদের আছে একবার ৫টি ডিসমিসালের রেকর্ড। মুশফিকের ওডিআই সেঞ্চুরি সংখ্যা ৯টি। ওডিয়াইতে শতকের হিসেবে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যৌথভাবে সাকিবের সঙ্গে দ্বিতীয় স্থানে মুশফিক। শীর্ষে আছে ১৪টি সেঞ্চুরি করা তামিম। ৫৮ বার ওডিআইতে অর্ধশত ছুঁয়েছেন মুশফিক। যা বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ। প্রথম দুটি স্থানে আছে যথাক্রমে তামিম (৭০) ও সাকিব (৬৫)। বরাবর ১০০টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন ওয়ানডেতে। তার চেয়ে বেশি ছক্কা মেরেছেন কেবল মাহমুদউল্লাহ (১০৭) ও তামিম (১০৩)। চলমান চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কোন ম্যাচ না জিতে বিধ্বস্ত হয়ে ফিরেছে বাংলাদেশে।  অন্যদিকে ব্যাট হাতে চরম ব্যর্থ ছিলেন মুশফিক। ২ ম্যাচে করতে পেরেছিলেন কেবল ২ রান। এরপরই সমালোচিত হতে থাকেন ৩৭ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। একই দিন সকালে ৩৫ বছর বয়সী স্টিভেন স্মিথেও ওয়ানডে জার্সি তুলে রাখেন। অজি এই তারকা ব্যাটসম্যানের অবসরের খবর চাউর হওয়ার পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুশফিককে নিয়ে সমালোচনা ক্রমাগত বাড়তে থাকে। সমালোচকদের আর সুযোগ না দিয়ে নিজেই ওয়ানডে থেকে সরে পড়লেন তিনি।