পরস্পরের সহযোগী হিসেবে কাজ করতে চাই : নবাগত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নবাগত পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস জেলার গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। আজ পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে তিনি এই মতবিনিময় করেন। পুলিশ সুপার বলেন, আপনারা জানেন, সদাশয় সরকার লটারির মাধ্যমে দেশের ৬৪ জেলার পুলিশ সুপার পদে রদবদল করেছেন। এটা মূলত আগামী ফেব্রুয়ারিতে সম্ভাব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে করা হয়েছে এবং আমাকে এই জেলায় পদায়ন করা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে এই নির্বাচন যেন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও জবাবদিহিমূলক হয় সেই লক্ষগুলোকে সামনে রেখে পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা থাকবে। তিনি বেলন, এই চেষ্টার আলোকে আমরা এরই মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করেছি এবং ঝুকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে আমাদের পুলিশি টহল জোরদার করা হবে। নির্বাচনী পরিস্থিতি যেন নির্বিঘ্ন থাকে, সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা থাকবে।
মাদক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫টি থানার মধ্যে ৪টি সীমান্তবর্তী হওয়ার কারণে মাদকের প্রবণতা রয়েছে। তিনি বলেন, আপনারা এই জেলার মানুষ আর আমরা দূরদূরান্ত থেকে সেবা দিতে এখানে এসেছি। আমরা সর্বোচ্চ সেবা দিতে চাই। এজন্য আপনাদের সহযোগিতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আপনাদের তথ্য-উপাত্ত আমাদের কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক সহযোগিতা করবে। আশা করব, সেই সহযোগিতা আপনারা আমাকে করবেন।
পুলিশ সুপার বলেন, মাদক চোরাচালানের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের তালিকা হয়তো আমাদের কাছে আছে, তারপরও আপনাদের মাধ্যমে তালিকাটা হালনাগাদ করব এবং এই মাদক চেরাচালান যেন জিরো টলারেন্সে রাখতে পারি, আমি সেই লক্ষে কাজ করব।
গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি দেখেছি এখানে নারী নির্যাতন ও বাল্যবিয়ের প্রবণতা রয়েছে। এর পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনাও এখানে আশঙ্কাজনক। এর কারণগুলো চিহ্নিত করা অত্যন্ত জরুরি। এইসব কারণ চিহ্নিত করে শুধু পুলিশ নয়, আপনারা এবং সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষকে সাথে নিয়ে আমরা কাজ করব। একজন মানুষ একটি পরিবারের জন্য অনেক কিছু। গত পরশুদিন একজন শিক্ষক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। হয়তো তিনি সেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। শুধু শিক্ষকই নন, যে কোনো মানুষকেই আমরা সড়ক দুর্ঘটনায় হারাতে চাই না। কাজেই এই সড়ক দুর্ঘটনা যেন কমিয়ে আনা যায়, তার জন্য চালকদের যেমন সচেতন হতে হবে তেমনি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। এ জন্য চালকদের প্রশিক্ষণ দরকার। সকলকে ট্রাফিক আইন মেনে চলাচল করতে হবে। তাহলেই সড়ক দুর্ঘটনা অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এ কাজেও সাংবাদিকদের সহযোগিতা প্রয়োজন। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন। ট্রাফিক ও যানজট বিষয়ে আমি সরেজমিন পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশ ও সাংবাদিক আমরা উভয়ই যেহেতু সমাজের পরিবর্তনের জন্য কাজ করি, সমাজের ভালোর জন্য কাজ করি সেহেতু আমরা পরস্পরের সহযোগী হিসেবে কাজ করতে চাই। আপনারা আমাকে সঠিক তথ্য দিলে আমি তা বাস্তবায়ন করব।
বক্তব্যের শুরুতে গৌতম কুমার বিশ্বাস বলেন, দেশের স্বার্থে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি এবং জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহতদের আরোগ্য কামনা করি। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এ.এন.এম. ওয়াসিম ফিরোজ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াসির আরাফাতসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।