নির্যাতিত সাংবাদিকের পাশে থাকবে প্রেস কাউন্সিল : বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান

578

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও সচিব (বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ন সচিব) শ্যামল চন্দ্র কর্মকার জানিয়েছেন, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি কোন সাংবাদিক নির্যাতনের স্বীকার হন, তাহলে সেই সাংবাদিকের পাশে দাঁড়াবে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল। এতদিন সাংবাদিকদের কোন অভিভাবক ছিল না, এখন থেকে প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিকদের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করবে। সাংবাদিকরা যেন তাদের কষ্টের কথা প্রেস কাউন্সিলে বলতে পারে এবং তার প্রতিকার পায়, সেই লক্ষে প্রেস কাউন্সিল আইনকে যুগোপোযোগী করা হচ্ছে। আগে শুধুমাত্র সংবাদ প্রকাশের ফলে  সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ করতে পারত, কিন্তু এখন থেকে সাংবাদিকরাও সেই সুযোগ পাবেন। আগামী ২৬ তারিখের মধ্যে আইনটি চুড়ান্ত হবে। মঙ্গলবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতকালে তাঁরা এই তথ্য জানান। এ সময় প্রেস কাউন্ষিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সাংবাদিক, প্রশাসনসহ সকল সেক্টরের প্রতিনিধিদের এক হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করার আহবান জানান। তিনি বলেন-জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুৃর রহমান স্বাধীনতা লাভের পরপরই সংবাদপত্র শিল্প এবং সাংবাদিকতা পেশাকে নিরপেক্ষ এবং জবাবদিহিতামূলক করার লক্ষ্যে তাঁরই নির্দেশে ও উদ্যোগে ১৯৭৪ সালে প্রেস কাউন্সিল এ্যাক্ট প্রণীত হয়। আজ তার সুফল সাংবাদিকরা পেতে শুরু করেছেন। এসময় চাঁপাইনবাবগঞ্জে জেলা প্রশাসক মো মাহমুদুল হাসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এরশাদ হোসেন খান সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ওয়ারেছ আলী মিঞা উপস্থিত ছিলেন।
এ দিকে গত কাল বুধবার সাংবাদিকদের সাথে সকাল সাড়ে ১০ টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সার্কিট হাউসে নির্ধারিত মতবিনিময় কালে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার আরও বলেন, সাংবাদিকদের অভিভাবক সংগঠন হিসাবে আগামীতে কোন সাংবাদিক নির্যাতনের স্বীকার হলে,  সে বিষয়ে তদন্ত করবে প্রেস কাউন্সিল। এ সময় তিনি বলেন, সাংবাদিকতা একটা ঝুঁকিপূর্ণ পেশা, সাংবাদিকরা সংবাদ তৈরীতে যে পরিমান কষ্ট করেন, যে পরিমান ঝুঁকি নেন, তারা কি সে অনুযায়ী তাদের প্রাপ্তটা পান, আমরা দেখেছি অনেক ক্ষেত্রেই সাংবাকিরা সেটা পান না।
তিনি বলেন, হলুদ সাংবাদিকতা নিয়ে আমরা কথা বলি, এই হলুদ সাংবাকিতার সৃষ্টি হয়, যখন একজন সাংবাদিককে একটি আইডি কার্ড ধরিয়ে দিয়ে কোন সম্পাদক বা মালিক বলেন, তোমাকে আর কিছু দিতে পারব না। এটা দিয়ে যা কিছু করার করো। তখন সাংবাদিকরা হতাশ হয়ে হলুদ সাংবাদিকতায় নেমে পড়ে।
সাংবাদিকতার নীতিমালা অনুসরণ করে সংবাদ পরিবেশনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা যাতে তাদের অধিকারটা ঠিকমত পায় সে লক্ষে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রেস কাউন্সিলের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই সাথে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যাতে সরাসরি মামলা না করে প্রেস কাউন্সিলে বিষয় গুলো সুরাহা করা যায়, সেই লক্ষেও কাজ করছি আমরা।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এরশাদ হোসেন খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহাবুব আলম খান, জেলা তথ্য কর্মকর্তা ওয়াহেদুজ্জামান জুয়েল, রুর‌্যাল জার্নালিস্ট ফাউ-েশনের চেয়ারম্যান এসএম জহিরুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ ও সচিব (বাংলাদেশ সরকারের যুগ্ন সচিব) শ্যামল চন্দ্র কর্মকার চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক সফরে এসে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন।