দেশজুড়ে বড় আন্দোলনের প্রস্তুতির নির্দেশ ইমরান খানের

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার দলকে ‘পাকিস্তানজুড়ে বড় ধরনের আন্দোলন’ শুরুর প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার (২৭ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। সোমবার রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তার বোন আলীমা খান। তিনি বলেন, “ইমরান খান বলেছেন, তার দলের এখন ইসলামাবাদের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার পরিবর্তে দেশব্যাপী আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।”

পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সরকারের সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। আলীমা খান বলেন, “ইমরান খান বলেছেন- তারা (সরকার) যতই নির্যাতন করুক না কেন, তিনি কখনই দাসত্ব মেনে নেবেন না। মাথা নত করার চেয়ে তিনি সারাজীবন জেলে থাকতে পছন্দ করবেন।”

আলিমা আরো অভিযোগ করেন, ইমরানের ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তাকে পরীক্ষা করতে দেওয়া হচ্ছে না। আদালতের অবমাননার আবেদনের আদেশ সরকার অমান্য করছে।

তিনি বলেন, “ইমরান খানকে চাপে রাখার জন্য তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তারপরও ইমরান বলেছেন, তিনি মাথা নত করবেন না।”

আলিমা ভ্লগার ও ইউটিউবারদেরও সমালোচনা করেছেন যারা দাবি করেন যে, ইমরানের মুক্তির জন্য সরকারের সঙ্গে একটি গোপন সমঝোতা চুক্তি করেছে পিটিআই।

আলিমা জানান, “দলের ভেতর বিশ্বাসঘাতকদের প্রতি কড়া বার্তা দিয়ে ইমরান বলেছেন, যারা উইকেটের দুই পাশে খেলে, তাদের জন্য দলে কোনো জায়গা নেই।”

এদিকে, পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর আলী খান আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই দলের নেতা কারাবন্দী ইমরান খানকে মুক্তি দেওয়া হতে পারে।

সোমবার ইসলামাবাদ হাইকোর্টের (আইএইচসি) বাইরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় গোহর দলীয় কর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সব আইনি বাঁধা শেষ হতে চলেছে। আমরা তার মুক্তির জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা বিক্ষোভ করেছি, সংসদে বিষয়টি উত্থাপন করেছি ও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।”

তিনি বলেন, “কর্মীদের প্রশ্ন তোলার পূর্ণ অধিকার আছে এবং আমরা তাদের আবেগকে মূল্য দিই। কেউ বুঝতে পারে না যে, ইমরান খান কীভাবে ও কেন দুই বছর ধরে কারাবন্দী রয়েছেন।”

তিনি উল্লেখ করেন, “দলের ধৈর্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের জনগণ ক্লান্ত, এমনকি বিচারকরাও রায় লিখতে লিখতে ক্লান্ত। আমরা ইমরান খানের মামলাগুলো নিষ্পত্তি ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি নিশ্চিত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।”

প্রসঙ্গত, ৭১ বছর বয়সি সাবেক ক্রিকেটার-রাজনীতিবিদ ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাবন্দী রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদ পর্যন্ত একাধিক মামলা রয়েছে, যা ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে অপসারণের পর থেকে শুরু হয়।