দেখে আসুন পুরুলিয়ার মুরুগুমা লেক

726

যদি আপনি এই এখন কলকাতায় বেড়াতে যেয়ে থাকেন, তাহলে পুরুলিয়ার প্রকৃতিকে এক্সপ্লোর করার এটাই সেরা সময়। দলবল নিয়ে বেরিয়ে পড়–ন মুরুগুমার পথে। ঝাড়খÐের সীমান্তের আদিবাসী গ্রাম্যতায় নিজেকে সেঁকে আসুন দু’টো দিন অযোধ্যা পাহাড়ে ট্রেক করতে গিয়ে আশপাশটা ঘুরে আসেন অনেকেই। সেখানেই মুরুগুমা। সহজঝোরার জল আটকে দাঁডেিয় বিশাল জলাধার। মুরুগুমা ড্যামের সৌন্দর্য এই সময় আরো বেশি হয়ে থাকে, বলাই বাহুল্য। ঝোপজঙ্গলে অজ¯্র পাখির সন্ধান, ড্যামের ধারে সূর্যাস্ত দেখা, রাতে জলের ধারে ক্যাম্পফায়ার আর আদিবাসীদের নাচসব মিলিয়ে ট্রিপটা জমে যাবে আপনার। মুরুগুমার আশপাশে দেখার জায়গার অভাব নেই। ঝালদা, পাখিপাহাড়, বামনি ওয়াটারফল, তুরগা ফলস, দেউলঘাটা মন্দির, খয়রাবেড়া লেক কতো কী রূপসী বাংলা দু’হাত ভরে সাজিয়েছে পুরুলিয়াকে। রুক্ষতার মধ্যেও যে আশ্চর্য সৌন্দর্য, সেটা দু’চোখে মেখে নিতে একবার ঘুরে আসতেই হবে এই জেলায়। যে সময়ে যাওয়ার প্ল্যান করবেন, সেই সময় সেখানে কোনো আদিবাসী উৎসব চললে সোনায় সোহাগা সামিল হতে পারবেন আপনিও। আগে থেকে বলা থাকলে ছৌ নৃত্যশিল্পীরা পর্যটকদের জন্য বিশেষ মহিষাসুরমন্দিনী পালার আয়োজনও করে থাকেন। এখানকার গ্রাম্য জীবনযাপন আলাদা করে পর্যবেক্ষণ করার মতো। সামান্য চাষবাস করে প্রতিক‚লতার সঙ্গে লডাই করে নিয়ত কীভাবে দিন কাটাচ্ছেন এখানকার ভূমিপুত্রেরা, সেটা নিজের চোখে দেখে আসা দরকার। শাল-পিয়ালের গভীর জঙ্গল আর মানভূমের মাটি এখন বর্ষায় সিক্ত। হাতে বেশ কয়েকটা দিন সময় থাকলে একইসঙ্গে বাঘমুÐিও ঘুরে ফেলতে পারবেন স্বচ্ছন্দে। একটা গাড়ি ভাড়া করে মুরুগুমা থেকেই আপার ড্যাম, লোয়ার ড্যাম, মার্বেল লেক দেখে আসুন। তবে মুরুগুমাকে বেস করে পুরো ঝালদা-অযোধ্যা সার্কিটটা ঘুরতেই আপনার উইকএন্ড কেটে যাবে। পূর্ণিমার রাতে মুরুগুমার ড্যাম অপার্থিব হয়ে ওঠে সেই সময় বনফায়ার কিংবা গিটারের টুংটাং ফেলে জলের ধারে বসে মৌনমুখর রাত্রিকে অনুভব করাই ভালো। শীতকালে গেলে পলাশে লাল হয়ে ঢেকে থাকে গোটা অঞ্চলটা। আর ঠাÐাও পড়ে জাঁকিয়ে এখন শীত তাই প্ল্যান করতেই পারেন বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সকলকে নিয়ে।
কীভাবে যাবেন পুরুলিয়া : যাওয়ার ট্রেন ধরতে হবে আপনাকে। রূপসী বাংলা, চক্রধরপুর, রাঁচি-হাতিয়ার মতো ট্রেন ধরে নামুন ঝালদা স্টেশনে। মুরিতে নেমেও যাওয়া যায়। স্টেশন থেকে গাড়ি ভাড়া করতে হবে। পুরুলিয়া শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে মুরুগুমা লেক। বেগুনকোদর হয়ে যাওয়া যায়। বাইক বা গাড়িতে গেলে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে যান।
কোথায় থাকবেন : বেশ কিছু হোম স্টে রয়েছে এখানে। সেরকম কোথাও থাকলেই জায়গাটার আসল রূপ ধরা সহজ হবে। এ ছাড়া ড্যামের ঠিক পাশেই রিসর্ট রয়েছে। ইন্টারনেট দেখে আগে থেকে খোঁজ করে বুকিং করে যেতে পারেন।