দীর্ঘমেয়াদি শিশুর কাশি হলে করণীয়

60

শিশু বয়সের অসুখে কাশি অন্যতম প্রধান উপসর্গ। কাশির শব্দ যতটা ভীতিকর শোনায় কার্যত তা তত মারাত্মক অবস্থা বোঝায় না। বরং কাশি এমন একটা উপকারী রিফ্লেক্স, যা গলা ও বুকের মধ্যে জীবাণু প্রবেশে বাধা দেয়।ল্যারিংস (ভয়েস বক্স) ও ট্রাকিয়া (উইন্ড পাইপ) প্রদাহে এটা ঘটে। তিন বছরের কম বয়সী শিশুর শ্বাসনালিপথ এমনিতেই সরু। প্রদাহে তা অধিক সরু হওয়াতে বিপদের ঝুঁকি দেখা দেয়। ক্রুপের সঙ্গে স্ট্রাইডর বা শ্বাসে শাঁইশাঁই শব্দ উৎপন্ন হয়, যা বিপজ্জনক।

হুপিং কাশ : একটার পর একটা কাশির দমক। বিরতিবিহীনভাবে শেষ হয়, গভীর শ্বাস নিয়ে যা হুপিং শব্দ উৎপন্ন করে। এক বছরের নিচের বয়সে বেশি ঝুঁকি। ভ্যাকসিন দেওয়ার কারণে বর্তমানে তা কমেছে।

কাশির সঙ্গে বুকের খাঁচায় বাঁশির মতো আওয়াজ : ফুসফুসের অভ্যন্তরে শ্বাস-প্রশ্বাস জালিকার প্রদাহে এ অবস্থা তৈরি হয়। শিশু বয়সের অ্যাজমা ও ব্রংকিওলাইটিস অসুখের লক্ষণ।

রাতের কাশি : শিশু ঠাণ্ডা-সর্দিতে ভুগলে শ্লেষ্মা নাক ও সাইনাস থেকে বাহিত হয়ে গলায় পড়ে। ফলে কাশি হতে থাকে। শিশুর ঘুমে বিঘ্ন ঘটায়।
এ হতে পারে অ্যাজমার প্রাথমিক লক্ষণ।
দিনের বেলায় কাশি : ঘরের ব্যবহৃত এয়ার ফ্রেশনার, ধোঁয়া কিংবা পোষা প্রাণীর সংস্পর্শে অ্যালার্জি—এসবের কারণে হয়ে থাকতে পারে।
কাশির সঙ্গে জ্বর : ঠাণ্ডা-সর্দি ফ্লুতে হয়। তাতে হাঁপানির সূচনা ঘটতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি কাশি : কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকে। অ্যাজমা, অ্যালার্জি ও ক্রোনিক ইনফেকশনসে দেখা যায়।

চিকিৎসা

-শিশু বয়সের বেশির ভাগ কাশি ভাইরাসজনিত। আপনাআপনি সেরে যায়। কখনো বা দুই সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। চিকিৎসক ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ মনে না করলে অ্যান্টিবায়োটিক দেন না।
-বাজার থেকে কেনা কফ-কাশির সিরাপ মেডিসিন নিতান্ত অপ্রয়োজনীয়। বিশেষ করে ছয় বছর বয়সের কম বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে এর ব্যবহার নিষিদ্ধ।
-গরম পানির ধোঁয়া বা ভাপ নেওয়া।
-নিরাপদ উপায়ে কাশির প্রশমন যেমন শিশুকে লেবুমিশ্রিত পানি, হালকা চা, তুলসীপাতার রস, মধু—এসব খাওয়ানো।
শিশুর শাসকষ্ট, দ্রুত শ্বাস, ঠোঁট-মুখ-জিভ নীল হওয়া, বেশি মাত্রায় জ্বর, তিন মাসের কমবয়সী শিশুর কয়েক ঘণ্টা ধরে কাশি, শ্বাসে শাঁইশাঁই শব্দ, পানিস্বল্পতা—এসব লক্ষণ যদি কাশির সঙ্গে দেখা যায়, তবে অনতিবিলম্বে হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।