ডেঙ্গুতে মৃত্যুর প্রধান কারণ জানালেন স্বাস্থ্যের ডিজি

92

সারা দেশে চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের প্রায় প্রত্যেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারের পাশাপাশি শক সিন্ড্রোমে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি।

শনিবার (১০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহম্মদ খুরশীদ আলম এ তথ্য জানান। খুরশিদ আলম বলেন, আমরা ক্লিনিক্যাললি তাদের মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা করেছি। আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী প্রায় প্রত্যেকের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভার এবং শক সিন্ড্রোমে। এছাড়া, অন্য কোনো কারণ আছে কি না, তা জানার জন্য অটোপসি করা প্রয়োজন। কিন্তু তা পরিবার অনুমোদন দেবে না। আর এটা সাধারণ প্র্যাকটিসও নয়। স্বাস্থ্যের ডিজি জানান, চলতি বছরে তুলনামূলক ঢাকার বাইরে তেমন রোগী ভর্তি নেই। বেশিরভাগ রোগী রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসাপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে বর্তমানে সর্বোচ্চ ১৪৭ জন রোগী মুগদা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তবে রাজধানীর বাইরে রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও আমরা সারা দেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রেখেছি। এ বিষয়ে সবাইকে নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সংশোধিত গাইডলাইন প্রত্যেক হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোর চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক, ওষুধসহ সবকিছু সরবরাহ করা হচ্ছে।

পরীক্ষার বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে কি না, জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, যারা আমাদের কাছে আসছেন- তাদের ডায়াগনোসিস করা হচ্ছে৷ যারা আসছেন না তাদের তো করা সম্ভব না। এ বিষয়ে আমরা সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছি। গণমাধ্যমসহ সবাইকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসারও অনুরোধ জানাচ্ছি। মানুষকে সচেতন করতে হবে। কারো জ্বর হলেই যেনো তারা ডেঙ্গু পরীক্ষা করান।

হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক শেইখ দাউদ আদনান জানান, ডেঙ্গু পরীক্ষায় সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার জন্য সব হাসপাতালকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের গত বছরই পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেক হাসপাতলে গাইডলাইন সরবরাহ করা হয়েছে। রোগীদের জন্য মশারি নিশ্চিত করা হয়েছে। চিকিৎসক দেখলে তারা মশারির ভেতর ঢুকে যাচ্ছেন, বাকি সময় রোগীরা বাইরে থাকছেন। রোগীদেরকে মশারির ভেতরে রাখার বিষয়ে পুলিশিং ব্যবস্থা করার চেয়ে রোগীদেরকেই নিজেদের স্বার্থে বেশি সচেতন হতে হবে। ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুস্থ হওয়ার পরও রোগীদের জটিলতা বেশি দেখা যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। ডেঙ্গু রোগীদের সব তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে অধিদপ্তরের এমআইএস শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য ও ডেঙ্গুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রোগীদের তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালগুলোকে আগত রোগীদের মোবাইল নম্বর ও ঠিকানা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু ব্রিফিংয়ের আওতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে প্রতিদিন রাজধানীর ৫৩টি ডেডিকেটেড হাসপাতালের সঙ্গে আরও ৩২টি হাসপাতালসহ মোট ৮৫টি হাসপাতালের তথ্য তুলে ধরা হবে।