ডিপফেক ভিডিও কীভাবে চিনবেন

96

একুশ শতকের ফটোশপিং’এই প্রযুক্তিটি এক্সিসটিং সোর্সকে সরিয়ে বা সোয়াইপ করে নতুন কিছু বসাতে পারদর্শী। অর্থাত্ এর মাধ্যমে আপনার মুখের জায়গায় অনায়াসেই ব্যবহার করা যাবে অন্য কোনো ব্যক্তির মুখ। এআই নির্ভর এই প্রযুক্তি শুধু ভিডিও নয়, ফেক প্রোফাইলের ছবি তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। সঙ্গত কারণে যেকোনো ছবি বা ভিডিও প্রথম দর্শনেই বিশ্বাস করাটা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। তাই সিরিয়াস কোনো ভিডিও বিশ্বাস করার আগে বেশ কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা দরকার।

সাধারণত ডিপফেক ভিডিও খুব একটা বড় হয় না। কারণ, একটা ভিডিওতে চরিত্রের মুখের প্রতিটা অভিব্যক্তি ফ্রেম বাই ফ্রেম এডিট করতে হয়। ভিডিওর দৈর্ঘ্য যদি বেশি হয়, সেক্ষেত্রে ফ্রেম বাই ফ্রেম এডিট করাটা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। আবার ডিপফেক তৈরির জন্য প্রতারকরা এমন ভিডিও বেছে নেয় না, যেখানে চরিত্রের ক্লোজআপ শট কাজে লাগাতে হয়। সেখানেও ফ্রেম বাই ফ্রেম এডিট করাটা মুশকিলের হয়ে যায়। তাই ডিপফেক ছবি বা ভিডিও শনাক্তে চরিত্রের চোখ, ঠোঁট, ত্বক, চুল এমনকি দাঁতটাও তীক্ষ্ন দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তখন সহজেই ধরা যাবে- মুখের অভিব্যক্তির অসংগতি, চারপাশের পরিবেশের বৈসাদৃশ্য, অপ্রাকৃতিক অডিও টোন, পিচ বিষয়বস্তুর প্রাসঙ্গিকতা, চোখের অস্বাভাবিক পিটপিট।

চোখ সত্যিই মনের কথা বলে। ডিপফেক ভিডিওতে তাই লক্ষ করতে হবে চরিত্রের চোখের পাতা স্বাভাবিক পিট পিট (ব্লিংক) করছে কি না। সাধারণত ডিপফেক ভিডিওতে চোখ দ্রুত পিট পিট করে। ২০১৮ সালের একটি গবেষণার সূত্র ধরে সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া রাশমিকা মান্দানার ভিডিওতে এর প্রমাণ মিলেছে। এই ডিপফেক ভিডিওতে দেখা গেছে তার চোখ স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ ব্লিংক করেছে। অডিওর সঙ্গে চরিত্রের লিপ-সিঙ্কিং কিছু না কিছু অসংগতি দেখাতেই থাকবে। তাছাড়া গাল ও কপালের মধ্যে ঠোঁট নাড়ানোর সময় ছন্দময়তা থাকে না। আসল ব্যক্তি আর ফেইক ব্যক্তির ত্বকের টোন নিশ্চয়ই এক হবে না। যদিও একটা ভিডিও থেকে একনজরে তা বোঝাটা একটু অসম্ভবই বটে। ডিপফেক ভিডিওতে চরিত্রের এমনই ত্বক দেখানো হয়, যাতে কোনো দাগ নেই। চুল ও দাঁত থাকে নিখুঁত। তার কারণ মূল চরিত্রের হুবহু নকল করা একটা উচ্চমানের সফটওয়্যারের জন্যও কঠিন। চুল ও দাঁত অনেক সময় ডিপফেক ভিডিও ডিকোড করতে সাহায্য করে। কারণ সেগুলো কখনোই স্বাভাবিক দেখায় না। এছাড়াও ফেইক ব্যক্তির হাতে থাকা আংটি, গলার হার ইত্যাদি থাকলে সেগুলো উজ্জ্বল ও স্বচ্ছ দেখাবে না। আলোর প্রভাবে সেগুলো অস্বাভাবিক দেখাতে পারে। ডিপফেকের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা প্রবল।