টিলারসন পদত্যাগের গুঞ্জন উড়িয়ে দিলেন

452

‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরেছে’, গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন।বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে টিলারসন বলেছেন, হোয়াইট হাউসের প্রতি তার অঙ্গীকার আগের মতই দৃঢ়। ‘যতদিন প্রয়োজন হবে ততদিনই দায়িত্বে থাকবেন’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
‘পদত্যাগের চিন্তাভাবনা করেছিলেন’, গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পর এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি। এনবিসির এক প্রতিবেদনে হোয়াইট হাউসের সূত্র উদ্ধৃত করে বলা হয়, জুলাই মাসে পদত্যাগের চিন্তাভাবনা করেছিলেন টিলারসন। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স তখন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ‘উত্তেজনা কমাতে’ টিলারসনকে পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় টিলারসন বলেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে থাকতে ভাইস প্রেসিডেন্ট আমাকে কখনোই প্রভাবিত করেননি, কারণ আমি কখনোই পদ ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করিনি।”
পদত্যাগের বিষয় উড়িয়ে দিলেও ট্র্রাম্পকে ‘নির্বোধ বলেছিলেন’ বলে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদনে বলা হলেও তা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি টিলারসন।“এই ধরনের ছোটখাট বিষয়ের মোকাবেলা করবো না,” সংবাদ সম্মেলনে বলেন তিনি।
টিলারসন বলেন, ট্রাম্পের এজেন্ডা বাস্তবায়নে বাধা দিয়ে নিজেদের কাজ হাসিল করতে গিয়ে অনেকেই মতদ্বৈধতার বীজ বপন করছে। ‘ওয়াশিংটনে নতুন’ হলেও তিনি কখনো এভাবে কাজ করেননি, ভবিষ্যতেও করবেন না বলে মন্তব্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর।
ট্রাম্পই এই বিষয়ে কথা বলতে বলেছেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে টিলারসন বলেন, প্রতিবেদন ছড়ানোর পর এ নিয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার কথা হয়নি।
টিলারসনের সংবাদ সম্মেলনের আগে ট্রাম্পও এনবিসির দিকে আঙুল তুলেন।টুইটারে তিনি বলেন, “এনবিসির খবরটি ভুয়া, এরা সিএনএনের চেয়েও অসৎ। ভালো প্রতিবেদনগুলোকে অপমান করছে তারা। তাদের খবরের মান পড়ে যাচ্ছে বলে আশ্চর্য হচ্ছি না।”
লাস ভেগাসে বন্দুকধারীর গুলিতে আহতদের দেখতে গিয়েও একই কথা বলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।
“পুরোপুরি মিথ্যা গল্প বানিয়েছে এনবিসি,” টিলারসনের ওপর ‘পূর্ণ আস্থা’ আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রেসিডেন্টকে ‘নির্বোধ’ বলেছেন এমন খবর উড়িয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নয়ের্তে।
“যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সম্বন্ধে এমন কথা কখনোই বলেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তিনি এই ধরণের ভাষা কারো বেলায়ই ব্যবহার করেন না।”নয়ের্তে বলেন, টিলারসন ‘মানসিকভাবে শক্ত’, যারা তার পদত্যাগ চাচ্ছে তাদের হতাশ করবেন তিনি।
পরে এক বিবৃতিতে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সও টিলারসনের সঙ্গে পদত্যাগ নিয়ে কোনো ধরণের আলোচনা হওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন।
এদিকে সিএনএন বলছে, টিলারসন যে ট্রাম্পকে ‘নির্বোধ’ বলেছিলেন সেই বিষয়ে তারা নিশ্চিত।
সংবাদমাধ্যমটির হোয়াইট হাউজ প্রতিনিধি এক টুইটে বলেন, “চলতি গ্রীষ্মে টিলারসন যে তাকে ‘নির্বোধ’ অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন সেই সম্বন্ধে ট্রাম্প অবগত আছেন।” ট্রাম্প অবশ্য এই টুইটের প্রতিক্রিয়ায় কিছু বলেননি। তিনি এনবিসির খবরকে ‘পুরোপুরি ভুয়া’ অ্যাখ্যা দিয়ে এজন্য সংবাদমাধ্যমটির ‘আমেরিকার কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত’ বলে মন্তব্য করেছেন।
বিবিসি বলছে, সর্বশেষ রোববার টিলারসনকে নিয়ে টুইট করেছিলেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্র পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর টুইটে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়া নিয়ে সময় নষ্ট না করতে টিলারসনকে পরামর্শ দেন।“শক্তি বাঁচাও রেক্স, যা করার দরকার তাই আমরা করবো,” ট্রাম্পের এই টুইটে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাজকে খাটো করা হয়েছে বলেও অনেক বিশেষজ্ঞের ধারণা।
এর পরপরই ‘জুলাইতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদত্যাগের চিন্তা করেছিলেন’, এমন খবর আলোচনায় আসে।