জেলায় শেষ মুহূর্তে আমন চাষাবাদে ব্যস্ত কৃষকরা

88

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরসহ বিভিন্ন স্থানে শেষ মুহূর্তে আমন চাষাবাদে ব্যস্ত দিন পার করছেন কৃষকরা। দ্রুতগতিতে তারা জমি তৈরি করে চারা রোপণ করছেন। অনেক আগে থেকে আমন চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এখন আউস ধান কেটে আমন ধানের চারা রোপণে কৃষকরা জমি তৈরি করছেন। তাদেরকে স্থানীয় জাত (চিনি আতব) রোপণ করতে দেখা গেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়ে যাবে।
গোমস্তাপুর উপজেলার কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন, এবার গোমস্তাপুর উপজেলায় ১৬ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্য ব্রিধান-৫১- ৪ হাজার ৮৫০ হেক্টর, স্বর্ণা- ২ হাজার ৮৫০ হেক্টর, ব্রিধান-৭৫- ১ হাজার ৮০০ হেক্টর, ব্রিধান-৪৯- ৭৭০ হেক্টর, ব্রিধান-৮৭- ৭০০ হেক্টর, বিনাধান-৭- ৪৫০ হেক্টর, বিনাধান-১৭- ৩৪৫ হেক্টর, বিনাধান-২২- ১৭০ হেক্টর, ব্রিধান-৩৪- ৩২০ হেক্টর, ব্রিধান-৭২- ২২০ হেক্টর, ব্রিধান-৯০- ৮০ হেক্টর, ধানিগোল্ড ২৩০ হেক্টর, অ্যারাইজ-৭০০৬- ২২০ হেক্টরসহ স্থানীয় চিনি আতব ৩ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করা হচ্ছে।
রোকনপুর গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, মৌসুমের শুরুর দিকে তিনি ৭ বিঘা জমি চাষাবাদ করেছেন। এখন ধানের গোড়া শক্ত হয়ে শিকড় গজাচ্ছে। কিছুদিন আগে পানির সমস্যা দেখা দিয়েছিল।
পার্বতীপুর ইউনিয়নের কৃষক এজাবুল বলেন, বৃষ্টি কম হওয়ার আবাদ করতে বেগ পেতে হয়েছে। তবে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) গভীর নলকূপের পানির ব্যবস্থা করে চাষাবাদ করা হয়েছে। এছাড়া শ্রমিকের মূল্য বেশি দিতে হয়েছে। তবে এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকলে ধানের উৎপাদন ভালো পাবেন বলে তিনি জানান।
গোপীনাথপুর মাঠের কৃষক মোজাহার বলেন, তার জমিতে বছরে তিনটি ফসল করেন। আউশ ধান (পারিজা) কেটেছেন। এখন তিনি চিকন (আতব) ধান রোপণ করছেন। ভালো ফসল পাবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
রাধানগর ইউনিয়নে দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ আল ফুয়াদ বলেন, শেষ মুহূর্তে আমন চাষাবাদ করছেন কৃষকরা। আউস ধান কেটে এখন চিনি আতব ধান রোপণ করছেন। এবার আউস ধান ভালো উৎপাদন হয়েছে। কৃষকরা বেশ খুশি। আমন ধানেও ভালো উৎপাদন হবে বলে তিনি আশাবাদী।
গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৬ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উৎপাদন ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ৪২৪ মেট্রিক টন। হেক্টরপ্রতি গড় উৎপাদন ৩ দশমিক ২৭ মেট্রিক টন। এ মাসের মধ্যে কৃষকের চাষাবাদকৃত জমিগুলো চারা রোপণে কাজ শেষ করবে। তিনি আরো জানান, এবার প্রথমবারের মতো এ উপজেলায় আমন মৌসুমে কৃষি প্রণোদনার মাধ্যমে সমলয় পদ্ধতিতে ধান বপন ও রোপণ করা হয়েছে। কৃষকদের বিনামূল্যে সার, বীজসহ অন্যান্য উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূল থাকলে কৃষকরা ভালো ফসল উৎপাদন করতে পারবে বলে তিনি জানান।