জেলা এলসিবিসিই প্রজেক্ট এর আয়োজনে, ইউনিসেফ এবং জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় “ফরমেটিং অ্যান্ড ফাংকশনিং অফ ডিস্ট্রিক্ট ক্লাস্টার অন এন্ডিং চাইল্ড ম্যারেজ এর উপর শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন থেকে ২ জন করে প্রতিনিধী কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন। আজ সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক এরশাদ হোসেন খান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান, ইউনিসেফ এর চাইল্ড প্রটেকশন অফিসার জেসমিন হোসেন ও প্রোগ্রাম অফিসার রমা সাহা, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাহিদা বেগম, জেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, জেলার প্রয়াস মানবিক উন্নয়ন সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক হাসিব হোসেন, এ্যাসোশিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট (এসিডি) এর প্রতিনিধি সারমিন সুবরিনাসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ। কর্মশালায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বাল্য বিয়ের কুফল ও এর প্রতিকার সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। প্রথমেই বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হাসান। এসময় তিনি কিশোরীদের উদ্দেশ্য করে বলেন প্রতিটি শিশুকে তার যোগ্যতা অনুযায়ী দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে হবে। সমাজে এবং রাষ্ট্রকে মিশুর যোগ্যতা অনুযায়ী কন্ট্রিবিউট করা সেখানে তার অবদানটি রাখা, দেশের উন্নয়নে তার ভুমিকা রাখা এবং নিজের জীবনে নিজের যোগ্যতার পরিপূর্ণ বিকাশ করা। একটা মানব জীবনের লক্ষ্য হল একজন মানুষ হিসেবে আমার ব্যক্তিত্বেও বিকাশ ঘটাবো, আমার যোগ্যতার বিকাশ ঘটাবো , এমনকি মেটার পরিপূর্ন ব্যবহার করে আমি আমার জীবনকে উপভোগ করবো ও তার সবটুকুই আমি আমার পরিবারকে দিব, আমার সমাজকে দিব এবং সর্বপরি তা আমি আমার রাষ্ট্রকে দিব। কর্মশালায় জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাহিদা বেগম তার বক্তব্যে বলেন শিশু বিবাহ আমরা তখনই বন্ধ করতে পারবো যখন আমরা সবাই মিলে কাজ করবো এবং ইউনিয়ন পরিষদ ভিত্তিক কাজ করবো। এর জন্য আমাদেরকে ইউনিয়ন তথা সমাজভিত্তিক কার্যক্রমগুলোকে একটা নির্দিষ্ট নিয়মের মধ্যে এনে কাজ করতে হবে।কিশোরীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়। প্রয়াসের উজ্জীবীত কিশোরী ক্লাব এর কার্যক্রম তুলে ধরে প্রয়াসের নির্বাহী পরিচালক হাসিব হোসেন বলেন ১৫টি কিশোরী ক্লাবকে আমরা বিভিন্ন উপকরন প্রদান করেছি। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আমাদেও ১৩ টি স্কুল ফোরাম আছে। কমিউনিটি ইবেন্টস আমরা ১৫টি করেছি, কমিউনিটি ক্লিনিকের সাথে সংযোগ স্থাপনের কাজ করেছি, কিশোরীদেও পুষ্ঠি ও দক্ষতার উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষন প্রদান করেছি। আমরা এই কিশোরী ক্লাবের জন্য একটা ম্যাগাজিন প্রকাম করছি যেখানে তারা তাদেও লিখা ও তাদেও চ্যালেঞ্জগুলো তুলো ধরবে। আগামীতে আরা এটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। সেইসাথে এসিডি এর প্রতিনিধি সারমিন সুবরিনাও তাদের কার্যক্রম তুলে ধরেন ইউনিসেফ এর চাইল্ড প্রটেকশন অফিসার জেসমিন হোসেন বলেন শিশুদেরকে সচেতন করার পাশাপাশি শিশুদের অভিভাবকদেরকেও সচেতন হতে হবে আমরা যারা অভিভাবক তারা মনে করি যে, শিশুরা ইদানিং ফেসবুক, ইন্টারনেট এগুলোর উপর বেমি নির্ভর হয়ে পড়ছে। যার জন্য খুব অসন্তুষ্ট হয়। কিন্তু এর জন্য কিন্তু আমরাও দায়ী। কারন আমাদেও উচিত তাদেরকে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিচার করা। কেন শিশুকে আমরা এর চেয়ে ভাল কিছু দিতে পারবোনা। মিশুর আসলে যে এ্যডুকেট এ্যাডেনশনটা পাওয়া উচিত সেই দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে এবং শিশুদেরকে আমাদের প্রশ্ন করতে হবে যে তারা সব বিষয়ে মনোযোগ রাখতে পারছে কিনা।সবশেষে সভাপতির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক এরশাদ হোসেন খান শিশুবিবাহ কখন দেয়া হয়? একটা মানুষ যখন একাধিক বিয়ে করে তখন সে তার আগের স্ত্রী, সন্তানকে ঠিকমত খরচ দেয়না। আর সেই মা তখন তার সেই কন্যা সন্তান বা পুত্র সন্তান এর ভার বহন করতে পারেনা আর তখনই সে তার ছোট্ট মেয়েটির বিয়ে দিয়ে দেয়। এসবের দিকে যদি আমরা একটু নজর দেই তাহলে এই যে শিশু বিবাহ সেটা আমরা বন্ধ করতে পারবো। উল্লেখ্য, কর্মশালায় আসা শিক্ষার্থীদের ৪ টি ভাগে ভাগ করে দলীয় কাজের মাধ্যমে তাদের শিশু বিবাহ বন্ধে বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়।