জেলায় পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন উপলক্ষে ওয়াজ মাহফিল, সেমিনার ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

362

পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) ১৪৪০ হিজরি উদ্যাপন উপলক্ষে “সবীনা খতম, ওয়াজ মাহফিল/সেমিনার ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলাপ্রশাসক এ জেড এম নূরুল হক। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শংকরবাটি হেফজুল উলুম এফকে কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. এমরান হোসেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কুরআন তেলায়াত করেন, হাকিমপুর বিশ্বাসপাড়া জামে মসজিদের ইমান মাওলানা মহসিন আলী। এরপর না’তে রাসূল শুনান আতাহির জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপার ভাইজার মাওলানা হযরত আলী। অনুষ্ঠানে এই দিন উদযাপন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত কুরআন তেলাওয়াত, কেরাত ও কবিতা আবৃতি প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরুস্কার তুলে দেন অতিথি বৃন্দ। এছাড়াও ইসলামিক ফাউন্ডেশন পরিচালিত জেলার বিভিন্ন লাইব্রেরীতে ইসলামী বই প্রদান করা হয়। শেষে মিলাদ ও দোয়া পরিচালনা করেন, মহাডাঙ্গা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা ময়েজ উদ্দিন। অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) এর জীবন ও আদর্শ নিয়ে আলোচনা করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলাপ্রশাসক এ জেড নূরুল হক বলেন, নবীর আদর্শে চলা, কুরআনের নির্দেশিত পথে চলা, এটা যেন আমার সারা বছরের পাথেও হয়। সরাবছর যেন বিষয়টা মনে রাখি। আমি যেন, বছরে একদিনের জন্য, বা বছরের দুটি ঈদের দিনে মনে রাখলাম বা সপ্তাহে একদিন জুম্মার দিন স্মরণ করলাম। এমন যেন না হয়। আমরা যেন মৌসুমী মুসলমান না হয়ে যায়। নবীর আদর্শকে আমরা বুকে ধারণ করব এবং কাজে কর্মে প্রতিফলন ঘটাবো এটাই আমাদের আজকের প্রতিশ্রুতি হোক। এসময় তিনি আরো বলেন, আমরা চাই না আমাদের সন্তারা জঙ্গিবাদের দিকে ধাবিত হোক। এটা শান্তির পথ নয়। হানাহানি, সন্ত্রাসবাদ ইসলাম সমর্থন করেনা। ইসলাম হচ্ছে শান্তি পথ। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) শান্তির জন্য চুক্তি করেছিলেন। তাই তার দেখানো পথ আমাদের অনুসরণ করতে হবে। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, শুধুমাত্র একটিমাত্র দিনে হযরত মোহাম্মদ (সঃ) কে স্মরণ করব তা কিন্তু নয়। আমরা সারা বছরব্যাপি, সারাক্ষণ ব্যাপি মনে রাখতে চাই। সেই চেষ্টা আমরা করছি। তার নিদর্শন কিন্তু দেখিয়ে গেছেন। যেগুলো হাদিসে আছে এবং আমাদের আল কুরআন আছে। যেগুলোর সমন্বয় করতে পারলে আমাদের জীবন অনেক সুন্দর হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, শংকরবাটি হেফজুল উলুম এফকে কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. এমরান হোসেন। তিনি এই দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, বহু সংখ্যক ফকির আওলিয়ার আন্তরিক ভালবাসার জোরেই ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছেন। কাজেই আজকে যদি কেউ চিন্তা করেন তরবারি প্রয়োগ করে, বোমা ব্যবহার করে, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করবেন, ইসলাম প্রচার করবেন। তাহলে এটা সঠিক চিন্তা হবে না। এটি ভ্রান্ত মত, ভ্রান্ত পথ। এই ভাবে ইসলাম প্রচার করা যাবে না। মুসলমানরা টিকে থাকতে পারবে না। এটি সঠিক পথ নয়। এটি সন্ত্রাসের পথ, এখান থেকে আমাদের ফিরে আসতে হবে। নয়তো আমাদের নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিব। শান্তির সহিত আন্তরিক ভালবাসা দিয়েই আমাদের ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা যদি সহিংসতা বন্ধ করতে পারি, আমাদের ছেলে মেয়েদের দেখে রাখতে পারি তাহলে আমাদের পরিবারে শান্তি বিরাজ করবে, সমাজে শান্তি বিরাজ করবে, দেশ উন্নত হবে। এদিকে, গোমস্তাপুরে পবিত্র ঈদ-ই-মিল্লাদুন্নবী উপলক্ষ্যে রহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজ জামে মসজিদে আলোচনা সভা ও দোয়া খায়ের অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে ইসলামীক ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজে অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস। প্রসাদপুর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল হাই সিদ্দিকি, রহনপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার সোলেমান মিঞা, রহনপুর ইউসুফ আলী সরকারি কলেজের আরবী বিভাগের প্রভাষক আতিকুর রহমান, ইসলামীক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার কাউসার জামানসহ অন্যান্যরা। আলোচনা শেষে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া খায়ের করা হয়।