জেলায়ও জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

297

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়ও শিশুদের জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০১৯ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে, শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন, সিভিল সার্জন ডা: এসএফএম খাইরুল আতাতুর্ক। এসময় তিনি ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ার উপকারিতা, মায়েদের জন্য করনীয় ও শতভাগ লক্ষ্য পূরণের আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আজকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২ লাখ ১ হাজার ৪০ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াবো। যেগুলো ৬ মাস থেকে ১ বছরের কম সেসব শিশুকে ১ ডোজ নীল ক্যাপসুল এবং যারা ১ বছর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত আছে তাদেরেকে ডোজ লাল ক্যাপসুল খাওয়াচ্ছি। চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমাদের প্রায় ২ হাজারের বেশী স্বেচ্ছাসেবী কর্মী আছে, প্রতিটি উপজেলায় আমাদের ৮টি করে কেন্দ্র আছে। আমরা যেভাবে উৎফুল্লভাবে আজকের এই ক্যাম্পেইন পালন করতে চেয়েছিলাম সেভাবেই হয়েছে। আর এই ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল এর প্রতি জনসাধারণও খুব সচেতন আছেন। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল শুধু রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করেনা, এটা শিশুদের অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, লম্বা হতে সাহায্য করে এবং ডায়রিয়া হবার আশংকাও কমায়। অতএব আমি সবাইকে বলবো যে, আপনারা প্রত্যেকেই নিজ নিজ কেন্দ্রে গিয়ে আপনাদের শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ান এবং সুস্থ সবল চাঁপাইনবাবগঞ্জ গড়তে আমাদের সাহায্য করুন। অন্যদিকে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার মরিয়ম খাতুন ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর গুণাগুণ তুলে ধরে বলেন, শিশুর শুধুমাত্র রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা ছাড়াও আরো বহুবিধ উপকার করে। আজকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস সকল শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হলো। আমরা খুবই আনন্দিত যে, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে আসা সকল অভিভাবকদের ভালোভাবে সেবা দিতে পেরেছি। এসময় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়াতে আসা কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা হলে তারা বলেন, প্রতি বছরের মতো এই বছরও আমরা আমাদের বাচ্চাদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়াতে নিয়ে এসেছি। আমরা যতটুকু জানি যে, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ালে বিভিন্ন রোগের হাত থেকে রক্ষা পাবে এবং রাতকানা রোগ হবেনা। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আব্দুল মাতিন, হাসপাতালের আর.এম.ও. ডা: নাদিম সরকার, রাজশাহী বিভাগের নার্সিং সহকারী পরিচালক শীষ মোহাম্মদ, ইপিআই মনিটরিং অফিসার আমিনুর রহমান, জেলা ইপিআই সুপারিনটেনডেন্ট আমিরুল ইসলামসহ জেলার প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। উল্লেখ্য, সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত জেলার ৫টি উপজেলা, ৪টি পৌরসভা ও ৪৫টি ইউনিয়ন এলাকায় ৬ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে।

নাচোলেও জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সকালে নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে মেডিকেল অফিসার ডাঃ ইমতিয়াজ তারিক শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর মাধ্যমে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার সাদিকুল ইসলাম, স্যানেটারী ইন্সপেক্টর ফাতেমা খাতুনসহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্যান্য চিকিৎসক ও ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পৌর এলাকাসহ উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ও জনসমাগম ঘটে এমন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে, বাসস্ট্যান্ড এবং গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় চত্বরে ওই এলাকার শুণ্য থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো কার্যক্রম চলমান থাকে।
গোমস্তাপুরেও ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইনে ৩৩ হাজার ১০৩ জন শিশুকে ভিটামিন “এ” ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। আজ সকাল ৮ টা হতে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত উপজেলার ১৯২ টি কেন্দ্রে শিশুদের “এ” ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। এর মধ্যে ১৪ জন প্রতিবন্ধী শিশু সহ ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী ৩ হাজার ৭৯০ জন, ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী ২৯ হাজার ২৯৯ জন শিশু রয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৩ হাজার ৮৬৩ জন, ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ২৯ হাজার ৫৯৪ জন। উপজেলা স্বাস্থ্য পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ সাইফুর রহমান খান জানান, বাদ পড়া শিশুরা আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে ভিটামিন “এ” ক্যাপসুল গ্রহণ করতে পারবে।