জেলার বাজারে বেড়েছে শীতকালীন সবজির দাম, কমেছে মুরগির দাম

201

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের বাজারে গিয়ে দেখা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সকল মাছের দাম ১০-২০ টাকা বেড়েছে। এদিকে মুদিবাজারে আদার দাম কমলেও বেড়েছে ডিম, রশুন, সোয়াবিন তেল, আতপ চাল ও চিনির দাম। কমেছে প্রায় সকল মুরগির দাম বেড়েছে শীততালীন প্রায় সকল সবজির দাম। মাছ ও সবজির দাম বেশি তাই ক্রেতর সংখ্যা কম বলে মনে হলেও মুরগির দাম কম থাকা সত্তেও ক্রেতার সংখ্যা কম। বিত্রেতারা বলছেন শীতের জন্য ক্রেতার সংখ্যা আনেক কম তাই বেচাকেনা ভালো চলছেনা।
জেলা শহরের মুদিবাজারের সাদিরুল ইসলাম ও রাজ কুমার বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় দাম বেড়েছে ডিম, রশুন সয়াবিন তেল,আতপ চাল ও চিনির দাম। পেঁয়াজর দাম ছিল ১০০ টাকা এসপ্তাহেও ১০০ টাকা আছে। আদার দাম ছিল ১৬০ টাকা, এসপ্তাহে দাম কমে হয়েছে ১৪০ টাকা কেজি। অপরদিকে, রশুনের দাম ১৪০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫০ টাকা কেজি। চিনি ছিল ৬০ টাকা কেজি এসপ্তাহে দাম বেড়ে হয়েছে ৬২ টাকা কেজি। ডিম ছিল ২৮ টাকা এসপ্তাহে দাম বেড়ে হয়েছে ৩০ টাকা। তেলের দাম ৯২ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৯৪ টাকা। নতুন আতপ চাল ৮৪ টাকা থেকে দাম বেড়ে ৮৮ টাকা।

মাছবাজারে বিক্রেতা আবদুল হানিফ বলছেন, শীতের কারণে জেলেরা মাছ মারছে কম, যার কারণে এসপ্তাহে প্রায় সকল মাছের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেশি। মাছের আড়তদার লতিফুর রহমান জানান, অতিরিক্ত ঠাÐার কারণে মাছের আমদানি কম সে হিসাবে মাছের দাম ১০-২০ টাকা বেড়েছে। এ সপ্তাহে গøাসকাপ, জাপানি, শিলভার, ব্রিকেটসহ প্রায় সকল মাছের দাম বেড়েছে। গøাসকাপ গত সপ্তাহে ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলেও এ সপ্তাহে দাম বেড়ে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। জাপানি গত সপ্তাহে ছিল ১৪০ টাকা কেজি, এ সপ্তাহে দাম বেড়ে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কাতল ছিল ১৯০-২০০ টাকা কেজি এসপ্তাহে দাম বেড়ে ২২০ টাকা কেজি হয়েছে। হাফ কেজির শিলভর ছিল ৮০ টাকা কেজি এসপ্তাহে দাম বেড়ে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কেজির রুই ছিল ১৮০ টাকা এসপ্তাহে দাম বেড়ে ২০০-২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নদীর মাছ কম, নদীতে মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে নদীর কামেছর দাম বেশি। পাবদা, টেংরা চাষ করা গুলো বাজারে আসছে। টেংরা ৪৫০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা কেজি এবং পাবদা ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে । ছোট জিওল মাছ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, গটি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বড় মাছের মত ছোট মাছের দামও ১০-২০ টাকা বার্তি।
আরেক মাছ বিক্রেতা জয়নুল আবেদীন বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় মাছের আমদানি কম ক্রেতার সংখ্যাও কম। আজকের বাজারে প্রায় প্রতিটি মেিছর দাম বেশি। দাম শুনে ক্রেতারা মাছ কম কিনছে। ইলিশ মাছের দাম গত সপ্তাহের মতোই আছে। কেজির ইলিশ ১ হাজার ২৫০ টাকা কেজি এবং ৫০০ গ্রামের ইলিশ ৭০০-৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন মাছ বিক্রেতা শুকুরউদ্দীন।
খুচরা মাছ বিক্রেতা মুনতাজুল আলী বলেন “শীতের সময় নদীর মাছ একটু কম হয়। এই জন্য মাছের দাম বেশি হয়েছে। বেশি দামে মাছ কিনে লাভ করো কঠিন, আবার যদি বিক্রি না হয় বাতে আরেক ঝামেলা তাই আমি আজ মাছ কিনতে পারিনি”।

সবজি বাজারের কথা হয় সবজি বিক্রেতা আব্দুল রশিদ ও শরিফুলের সাথে। শীতের কারণে সবজি উঠছেনা , তাই সবজির দাম একটু বেশি হয়েছে আজ। তারা বলেন, নতুন আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ঘিওনের বেগুন, শিম, পেঁপেঁ, টমেটো, শশাসহ শীতকালীন প্রায় সকল সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেশি। কমেছে গাজরের দাম। গাজর গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা কেজি এসপ্তাহে দাম কমে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে নতুন আলু ছিল ৩০ টাকা কেজি, এ সপ্তাহে দাম বেড়ে ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, পেঁপেঁ ১৫ টাকা থেকে বেড়ে ২০ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫ টাকা কেজি , বাঁধাকপি ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি, ঘিওনের বেগুন ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, শিম ২৫ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫ টাকা কেজি, টমেটোর দাম কমে ৬০ টাকাই চলে এসেছিল কিন্তু আবারো দাম বেড়ে ৯০ টাকা কেজি হয়েছে। শশার ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন সামনে সবজির দাম বাড়তে পারে।
সবজি বিক্রেতা শরিফুল আরো বলেন, শীতের কারণে ঘর থেকে বেরচ্ছেনা তাই আজকে ক্রেতার সংখ্যা একেবারে কম। অন্যদিকে, খাসির মাংস ৭০০ থেকে ৭২০ টাকা ও গরুর মাংসের দাম কমে ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান মাংস বিক্রেতা মাসুদ রানা।
এ সপ্তাহে প্রায় সকল মুরগির দাম ৫ থেকে ১০ টাকা কমেছে বলে জানান মুরগি বিক্রেতা রুবেল ও মাসুদ। তারা বলেন গত সপ্তাহেন তুলনায় আজকের বাজার খুব খারাপ। মুরগির আমদানি বেশি আছে। শীতের জন্য মানুষজন বের হচ্ছেনা। আমাদের বেচাকেনা খুব খারাপ হচ্ছে। সোনালি মুরগি ১৯০ টাকা থেকে কমে ১৮০-১৮৫ টাকা কেজি, লাল লেয়ার ২০০ টাকা থেকে কমে ১৮০-১৯০ টাকা কেজি, সাদা লেয়ার ১৭০ টাকা থেকে কমে ১৫০-১৬০ টাকা কেজি। দেশি মুরগি শীতের জন্য বাজারে খুব কম নামছে। দেশি মুরগি ৩৫০ থেকে কমে ৩২০ টাকা কেজি। প্যারেন্স ১৪৫ টাকা থেকে কমে ১৩০ টাকা কেজি, বয়লার ১০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার করতে আসা ক্রেতারা জানান, মুরগি দাম স্বাভাবিক আছে। তবে আজ সবজি ও মাছের দাম বেশি। ক্রেতা বিকাশ ও আমিন বালেন, মাছের দাম গত সপ্তাহে মাছের দাম বেশি ছিল এসপ্তাহে তার থেকেও ১০-১৫ টাকা বেশি বলে মনে হচ্ছে। আরেক ক্রেতা দুলাল বলেন, আজকে সবজির দাম গত সপ্তাহে আনেক কাম ছিল তবে আজ সবজির দাম আনেক বেশি। কাজিমুল হক বলেন বাজার করেতে এসে দেখি সবজির দাম আনেক বেশি। এখন বাজার করতে হবে-খেতে হবে বিধায় বাজার করছি। তবে সকলেই চান পেঁয়াজের দাম যেন খুব তারাতারি স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসে।