জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত ১১৪ শহীদের লাশ উত্তোলন শুরু করেছে সিআইডি

জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণ করা ১১৪ জন অজ্ঞাত শহীদের পরিচয় শনাক্তের লক্ষ্যে রায়েরবাজার কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন কার্যক্রম শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

রোববার সকাল সাড়ে নয়টায় লাশ উত্তোলন ও পরিচয় শনাক্তকরণ কার্যক্রম নিয়ে আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ।

তিনি বলেন, “আনাসের মতো যারা বুকের রক্ত ঢেলে দেশের জন্য রাজপথে লড়াই করেছিলেন, তাদের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা। এখানে যারা নামপরিচয়হীন অবস্থায় শায়িত আছেন, তাদের পরিচয় তখন যাচাই করা হয়নি। এখন তাদের পরিচয় উদঘাটন করা আমাদের জাতির প্রতি দায়িত্ব।”

আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞের নেতৃত্বে ফরেনসিক অপারেশন

সিআইডি প্রধান জানান, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা (OHCHR)-এর সহযোগিতায় আর্জেন্টিনার আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুইস ফন্ডিব্রাইডার ঢাকায় এসে পুরো অপারেশনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি গত ৪০ বছরে ৬৫টি দেশে এ ধরনের ফরেনসিক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়—

ডিএনএ পরীক্ষা শেষে পুনঃদাফন

সিআইডি প্রধান জানান, লাশগুলোর পোস্টমর্টেম, ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ এবং পরে ডিএনএ প্রোফাইল তৈরি করা হবে। ধর্মীয় মর্যাদা বজায় রেখে পুনঃদাফনও সম্পন্ন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত ১০ জন আবেদন করেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এখানে শহীদের সংখ্যা ১১৪ জনের বেশি হতে পারে। লাশ উত্তোলনের পর প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিত করা যাবে।”

শনাক্তকরণ শেষে পরিবার চাইলে লাশ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলেও তিনি জানান।
এ ছাড়া, ডিএনএ সংগ্রহের পর যে কেউ আবেদন করলে সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে—এজন্য সিআইডির হটলাইন নম্বর প্রকাশ করা হবে।

আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে কাজের অঙ্গীকার

ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লুইস ফন্ডিব্রাইডার বলেন, “গত তিন মাস ধরে আমি সিআইডির সঙ্গে কাজ করছি। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করেই পুরো প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হবে। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি—সব কাজ আন্তর্জাতিক ফরেনসিক স্ট্যান্ডার্ড মেনে সম্পন্ন হবে।”