জিম ম্যাটিসের কাবুল সফরের সময় বিমানবন্দরে জঙ্গি হামলা

297

এক অঘোষিত সফরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জিম ম্যাটিস আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে যাওয়ার কয়েক ঘন্টা পর কাবুল বিমানবন্দরে আত্মঘাতী বোমা ও মর্টার হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা।
বুধবারের এ ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ‘দুর্ঘটনাবশত’ বেসামরিক লোকজন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।ম্যাটিস কাবুলে নামার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই শহরটির মূল বিমানবন্দরের কাছে মর্টারের গোলাসহ ভারী গোলাবর্ষণ ও বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা।
এরপর নিকটবর্তী একটি বাড়িতে অবস্থান নিয়ে দিনের প্রায় অধিকাংশ সময় ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যায় তারা।
জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবান ও ইসলামিক স্টেট (আইএস), উভয়ই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াইরত আফগান স্পেশাল পুলিশ ইউনিটকে সমর্থন যোগাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনী পাল্টা বিমান হামলা চালায়। কিন্তু ‘ক্ষেপণাস্ত্রের ত্রুটিতে’ নিজেরাই নাজুক অবস্থায় পড়ে, এতে বেশ কিছু হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন নেটো মিশন জানিয়েছে। তবে বিস্তারিত আর কিছু জানায়নি তারা।
মিশনের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বেসামরিকদের ক্ষতিতে মিশন গভীরভাবে দুঃখিত। বেসামরিকদের হতাহত হওয়া এড়াতে প্রত্যেকটি পূর্বসতর্কতা গ্রহণ করেছি আমরা, যদিও আফগানিস্তানের শত্রুরা সচেতনভাবে এমন অবস্থান থেকে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল যা বেসামরিকদের প্রবল ঝুঁকির মুখে ফেলেছিল।”
এই লড়াই এবং বেসামরিক হতাহতের ঘটনার ছায়ায় ম্যাটিসের সফর ঢাকা পড়ে যায়। আফগানিস্তানের সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন প্রদর্শনের উদ্দেশ্যেই তিনি কাবুল সফরে গিয়েছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আফগান নীতি আরো আক্রমণাত্মক করে তোলার সঙ্গে যেসব ঝুঁকি জড়িত আছে এই হামলা তা তুলে ধরেছে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন আফগান নীতিতে বিমান হামলা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আফগানিস্তানের যুদ্ধ নিয়ে নতুন কৌশলের ঘোষণা দিয়েছেন। এই ঘোষণায় আফগানিস্তানের একের পর এক নতুন এলাকা দখল করতে থাকা তালেবানদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান বৃদ্ধির কথা বলা হয়েছে।
নতুন এই কৌশলের অধীনে আফগানিস্তানে মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের কমান্ডাররা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মার্কিন ‘ফায়ারপাওয়ার’ ব্যবহার করার অধিকতর স্বাধীনতা পাবেন।
এই নীতির অধীনে আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণে সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের আরো অতিরিক্ত তিন হাজার সেনা আফগানিস্তানে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ম্যাটিস।
এরা আফগান বিমান বাহিনী ও বিশেষ বাহিনী গঠনে সহায়তা করবে এবং জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সময় বেসামরিক হতাহত এড়াতে ‘মানুষের পক্ষে যা কিছু করা সম্ভব সবই করবে’ বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।