জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করবে ফিনল্যান্ড-বাংলাদেশ

167

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ এবং ফিনল্যান্ড একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। ফিনল্যান্ডে দেশটির প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিস্তোর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে দুই নেতা এই বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হন। ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে এই বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক (সচিব) মো. নজরুল ইসলাম বৈঠকের বিষয়ে গণমাধ্যমকে ব্রিফ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বেড়ে গেলে বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ ডুবে যাবে। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতি মোকাবিলায় তার সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় নিজের সম্পদ নিয়ে বাংলাদেশ ক্লাইমেট রেসিলিয়েন্স ফান্ড গঠনের কথা উল্লেখ করেছেন। শেখ হাসিনা ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টকে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে বিশেষ করে বাংলাদেশের উপকূল বরাবর সবুজ বেল্ট নির্মাণ এবং স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছাসের মতো প্রভাবগুলি মোকাবেলার বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে অবগত করেন। ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র পৃষ্ঠের উত্থান ঘটলে বাংলাদেশ মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হবে। তিনি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বিশেষ করে জলোচ্ছ্বাস থেকে ক্ষতি হ্রাস করার জন্য বৈশ্বিক সতর্কবাণী ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার উপর জোর দেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ১১ লাখ রোহিঙ্গা মানুষকে নিরাপদে ও সম্মানের সঙ্গে দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে দৃঢ় সমর্থন কামনা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ দেশ এবং রোহিঙ্গা জনগণের বিপুলসংখ্যক লোককে আশ্রয় প্রদান করা খুব কঠিন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, মিয়ানমার চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরও রোহিঙ্গা জনগণকে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি রাখেনি। ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্টের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মায়ানমার কর্তৃপক্ষ ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক নির্বাসনের পরেও মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়নি। ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়- বাংলাদেশ বন্ধুত্বের এই বৈদেশিক নীতি অনুসরণ করে। বাংলাদেশ প্রতিবেশীদের সাথে খুব ভাল সম্পর্ক বজায় রাখে।’ প্রধানমন্ত্রী এ বছর ৮.১৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধিসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সূচক বর্ণনা করেছেন এবং ফিনল্যান্ডের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহবান জানান। তার সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ফিনল্যান্ডের বিনিয়োগকারীরা যদি চান তবে তাদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল থাকতে পারে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পরপরই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য তিনি ফিনল্যান্ডের প্রশংসা করেন।