চীন প্রশ্নে উত্তপ্ত পাকিস্তানের সংসদ

192

চায়না স্টেট কনসট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন লিমিটেডকে শুল্ক ও কর অব্যাহতি দেওয়া নিয়ে পাকিস্তানের সংসদে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংসদ সদস্যরা। তারা বলছেন এই উদ্যোগে স্থানীয় শিল্প মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে। দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন এই খবর জানিয়েছে। পাকিস্তানে করাচি-পেশোয়ার মোটরওয়ে নির্মান কাজ করছে চীনের প্রতিষ্ঠানটি। এর নির্মাণ উপকরণ ও পণ্য আমদানিতে কর ও শুল্ক অব্যাহতি দেয় পাকিস্তানের ফেডারেল ব্যুরো অব রেভিনিউ(এফবিআর)। নির্দিষ্ট একটি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়া নিয়ে গত শুক্রবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দেশটির সংসদ। পাকিস্তান পিপলস পার্টির(পিপিপি) সংসদ সদস্য মুর্তজা ওয়াহাব বলেন, চীনের প্রতিষ্ঠানটিকে এফবিআর ১০.৯৮ বিলিয়ন রুপির কর অব্যাহতি দেওয়ার খবরে আমি বিস্মিত। আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির (এএনপি) সাংসদ ইলিয়াস বিলার বলেন, প্রকল্পের ৩৭ শতাংশ কাজ হয়ে যাওয়ার পর কর অব্যাহতি ও আমদানি শুল্ক বাতিল করার নীতি অনুমোদন দেওয়া ধারণাতীত। তিনি বলেন, এর মানে দাঁড়ায় অন্য চীনা কোম্পানিগুলোর দরজা খুলে দেওয়া আর ভবিষ্যতের জন্য তাদের যাবতীয় দুঃখ দূর কর দেওয়া। পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ(পিটিআই)সাংসদ নোমান ওয়াজির বলেন, এই প্রকল্পের প্রাথমিক ব্য ছিলো ২৪০ বিলিয়ন রুপি। আর এখন তা ৪৪০ বিলিয়ন রুপিতে পৌঁছেছে। তিনি জানতে চান চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর প্রকল্পের সব ক্ষেত্রেই এই কর অব্যাহতির নীতি চলবে কি না।
জবাব দিতে গিয়ে অর্থ মন্ত্রী রানা মুহাম্মদ আফজাল বলেন, যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ইকোনোমিক করিডোর কমিটির (ইসিসি) কাছে একটি সার সংক্ষেপ পাঠানোর পর তা বিবেচনায় নিয়ে আমরা এই কর অব্যাহতির নীতি অনুমোদন দিয়েছি। তিনি বলেন, আমাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে আর আমরা তা করেছি। এই বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেবে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করেছে পাকিস্তান। দেশটিতে গভীর সমুদ্র বন্দর, বিমানবন্দর, রেলপথসহ বেশ কয়েকটি বড় বড় প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। চীনের বেল্ট এ- রোড ইনিশিয়েটিভ প্রকল্পের বড় অংশীদার হয়ে উঠছে পাকিস্তান। সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের দাভোসে শেষ হয়ে যাওয়া ইকোনোমিক ফোরামের আলোচনায়ও চীনের এই প্রকল্পের পক্ষে দূতিয়ালি করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শহিদ খাকান আব্বাসি। বেল্ট এ- রোড ইমপ্যাক্ট’ শিরোনামে একটি প্যানেল আলোচনায় আব্বাসি বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করছি, এ প্রকল্পগুলো কোনও ব্যাঘাত ঘটাবে না এবং তা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।’