চীনে আম রপ্তানি শুরু ২৮ মে 
চাঁপাইনবাবগঞ্জে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম রপ্তানিকারক ও আম ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান ও সরকারের অতিরিক্ত সচিব আনোয়ার হোসেন। জেলা চেম্বার ভবনে মঙ্গলবার দুপুরে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন- আগামী ২৮ মে থেকে চীনে আম রপ্তানি শুরু হবে। এবছর ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানি করতে যাচ্ছি। এজন্য কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। যেমন, আম পরিশোধনের জন্য হটওয়ার্টার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট লাগবে, সে জায়গা থেকে আমরা চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১০টি হটওয়াটার প্লান্ট দিব, বাকি আপনারা ম্যানেজ করবেন। আম পরীক্ষার জন্য একটি কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র দরকার। সে জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বা রাজশাহীতে কোয়ারেন্টাইন ফ্যাসিলিটিজের ব্যবস্থা করা হবে। প্রসেসিং বা প্যাকেজিংটাও হবে। পাশাপাশি রাজশাহী বিমানবন্দর থেকে কার্গোবিমানে কম খরচে আম পরিবহন করা যায় কিনা, সে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলব।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে ২৫ থেকে ২৬ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হচ্ছে। ফ্রেশ আমের পাশাপাশি আমকে প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং প্রসেসিংয়ের বিরাট সম্ভাবনা আছে। এ কাজে উদ্যোক্তাদের উদ্যোগ নিতে হবে। তাদের উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে নতুন নতুন পদ্ধতি বের করতে হবে। আমাদের তরফে যা যা সহযোগিতা দরকার তা আমরা করব। পুঁজির বিনিয়োগের ব্যাপারে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করব। তাছাড়া কৃষিভিত্তিক ইপিজেড স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করব। আম বোর্ড করার ব্যাপারেও আলোচনা করব।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় আরো বক্তব্য দেনÑ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিচালক মোহাম্মদ শাহজালাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইকতেখারুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি খায়রুল ইসলাম, সহসভাপতি আখতারুল ইসলাম রিমন। আমচাষিদের মধ্যে বক্তব্য দেনÑ বরেন্দ্র কৃষি উদ্যোগের মুনজের আলম মানিক, আহসান হাবিব, ইসমাইল খান শামীমসহ অন্যরা।
আব্দুল ওয়াহেদ তার বক্তব্যে আমনুরায় কৃষিভিত্তিক ইপিজেড করার জন্য তার পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন।
মানিক তার বক্তব্যে জানান, ৬৩০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে মালদায় আম উৎপাদন শুরু হয়। বর্তমানে কৃষি অফিসের হিসাবমতে, প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টন আম হয়। তবে এ হিসাব আরো বেশি হবে। প্রায় ৯ লাখ মেট্রিক টন আম উৎপাদন হয়। এর মধ্যে বাজারজাত করতে পারি সাড়ে ৪ লাখ টন। বাকি আম কোনো না কোনোভাবে নষ্ট হয়ে যায়। আমরা যদি ফ্রেশ আমের পাশাপাশি আমজাত পণ্য তৈরি করতে পারি তাহলে ৩০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে এবং বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন হবে।
আহসান হাবিব তার বক্তব্যে আমের বাইপ্রডাক্টের ভ্যালু প্রায় ৬ হাজার কোটি হবে। তিনি আম বোর্ড, আম গবেষণা কেন্দ্র, আম নিয়ে নীতিমালা, আমবাগানে সেচের জন্য সোলার প্যানেল স্থাপন, কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানান।
আম উৎপাদন ও রপ্তানির বিদ্যমান অবস্থা সরেজমিন পরিদর্শনের লক্ষে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সফর করেন।  মঙ্গলবার সকালে তিনি শিবগঞ্জে রপ্তানিযোগ্য দুটি আমবাগান পরিদর্শন করেন। এছাড়াও তিনি হরিনগরে সিল্ক কারখানা ও শো-রুম পরিদর্শন করেন। পরে স্থানীয় উৎপাদকবৃন্দের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে তথ্য আহরণ ও এসব প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের ক্ষেত্রে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় করেন।