চাঁপাইনবাবঞ্জে শিশু হত্যা ও মরদেহ গুমের দায়ে দোকানদারের যাবজ্জীবন ও ৩ বছর সশ্রম কারাদন্ড
চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাত বছরের শিশু হামিমকে হত্যা ও তার মরদেহ গুমের অভিযোগে দায়েরকৃত একটি মামলায় মোখলেছুর রহমান নামে এক চা দোকানদারকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলার পৃথক আরেকটি ধারায় আসামীকে আরও তিন বছর সশ্রম কারাদন্ড,পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশও দেন আদালত। আজ বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র দায়রা জজ আদীব আলী একমাত্র আসামীর উপস্থিতিতে আদেশ প্রদান করেন। আদেশে বিচারক উল্লেখ করেন, দু’টি সাজার একটি ভোগের পর অপরটি কার্যকর হবে। নিহত শিশু হামিম জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার বাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের দাড়িপাতা টেন্ডার গ্রামের রেজাউল করিমের ছেলে। দন্ডিত আসামী মোখলেসুর একই গ্রামের মৃত সোহরাব হোসেনের ছেলে।
মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা যায় এবং রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী(পিপি) নাজমুল আজম বলেন, ২০২২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী সকালে বাড়ি থেকে খেলতে বের হয়ে নিখোঁজ হয় হামিম। সে বাড়ি থেকে বের হয়ে মোখলেসের চায়ের দোকানে গিয়ে দোকানে থাকা টিভির রিমোট নিয়ে খেলতে শুরু করলে রাগে দোকানদার মোখলেস শিশু হামিমকে গলাটিপে হত্যা করে। হত্যার পর মরদেহ ওইদিন নিজ বাড়িতে লুকিয়ে রাখে ও রাত হলে গ্রামের নিকটবর্তী একটি আমবাগানের ভেতর খেসারী ক্ষেতে গুম করার উদ্দেশ্যে ফেলে আসে। পরদিন ২২ ফেব্রুয়ারী সকালে স্থানীয়রা ওই বাগানে মরদেহ দেখতে পেলে পরিবার ও পুলিশকে খবর দেয়। এ ঘটনায় ওইদিন গোমস্তাপুর থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে মামলা করেন হামিমের পিতা রেজাউল।
মামলার তদন্ত শুরু করে পুলিশ পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারী দোকানদার মোখলেসকে তদন্তেপ্রাপ্ত আসামী হিসেবে আলামতসহ গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় মোখলেস আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোমস্তাপুর থানার তৎকালীন অফিসার ইনচার্জ(ওসি) দিলীপ কুমার দাস ২০২২ সালের ৩১মে মোখলেসকে একমাত্র অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। ১৩ জনের সাক্ষ্য, প্রমাণ ও শুনানী শেষে আদালত রবিবার মোখলেসকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় ঘোষণা করেন। আসামীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট আসিফ ইকবাল সুজন।