01713248557

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৪ ঘন্টায় ৭ সেমি বেড়েছে পদ্মা’র পানি, আপাতত বন্যার আশংকা নেই বলছে পাউবো; খাদ্যসহ বিভিন্ন মালামাল মজুদ করছে মানুষ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বন্যা আতংক দেখা দিয়েছে। ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়েছে মানুষ। অনেকেই প্রয়োজনীয় সামগ্রী খাবারসহ বিভিন্ন মালামাল মজুদ শুরু করেছেন। যদিও পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, আপাতত বন্যার কোন আশংকা নেই। গতকাল সংবাদ মাধ্যমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে অবস্থিত ফারাক্কা বাঁধের সকল গেট হঠাৎ করে খুলে দেবার খবরে জেলাজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। জেলার সবত্রই এ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা। ফেইসবুকে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য মানুষের আতংক বাড়ায়। এমনকি ফরাক্কার নিকবর্তী নদীতীরেবত জনপদে জনগণকে সতর্ক করে মাইকিংও করা হয়। যদিও পানি উন্নয়ন বোার্ড, প্রশাসন, নদীতীরবর্তী এলাকার জনপ্রতিনিধি,সাধারণ মানুষ বা দায়িত্বশীল কোন কর্তৃপক্ষ হঠাৎ অস্বাভাবিক পানি বাড়ার বা বন্যা সৃষ্টির কোন তথ্য গতকাল রাতে নিশ্চিত করে নি।

তবে সম্প্রতি দেশের পূর্বাঞ্চলে হঠাৎ করে ভয়াবহ বন্যার কারণে মানুষ এমনিতেই আতংকে রয়েছে। গতকাল বিকাল থেকে সবসময় মানুষ পানি বাড়ার খবর জানতে ও দেখতে ভীড় জমাচ্ছে নদীর তীরে। তাদের সাথে কথা বলে বোঝা যায়, মানুষের মনে এখনও অতিমাত্রায় আতংক রয়েছে।

আজ দুপুরে জেলা শহরের পুরাতন বাজারের ব্যবসায়ী মো. পান্না(৫৩) জানান, এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে মজুদ প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। বাজার ঘুরেও একই চিত্র চোখে পড়ে। ওই ব্যবসায়ী ভারতের মালদহ ও মুর্শিদাবাদে তাঁর নিজ আত্মীয় স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করেছেন জানিয়ে বলেন, সেখানে এমন কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি এখনও হয় নি যে তা প্রভাব চট করে বাংলাদেশে পড়বে। তবে প্রাকৃতিক দূর্যোগের ব্যাপারে আগাম কিছই বলা যায় না বলেও তিনি স্বীকার করেন।

আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চাঁপাইনববাবগঞ্জ পাউবো’র ভারপ্রাপ্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ময়েজ উদ্দিন বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে পদ্মা’র বিপদসীমা ২২.০৫ মিটার। গত সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় পাঁকা ইউনিয়নের পাংখা পয়েণ্টে পদ্মা’র প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ২০.৪৮ মিটার। যা মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় রেকর্ড করা হয়েছে ২০.৫৫ মিটার। গত ২৪ ঘন্টায় পানি বেড়েছে ৭ সে.মি। গত ১২ ঘন্টায় পানি বাড়ে নি। জেলার অপর প্রধান নদী মহানন্দার বিপদসীমা ২০.৫৫মিটার। সোমবার সন্ধ্যায় এটি রেকর্ড হয় ১৮.৪৯ মিটার। মঙ্গলবার সকালে এটি রেকর্ড হয় ১৮.৫১ মিটার। এটি ২ সেমি বেড়েছে। জেলার অপর নদী পূণর্ভবার বিপদসীমা ২১.৫৫ মিটার। মঙ্গলবার সকালে এটি ১৮.৫০ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছিল।

প্রকৌশলী ময়েজ বলেন, ফারাক্কার গেট সংক্রান্ত তথ্য সংবাদ মাধ্যমের। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিজস্ব কোন তথ্য নেই এ সম্পর্কে। তবে গেট খোলা থাকলেও আপাতত: বন্যার কোন আংশকা নেই। তবে সতর্ক থাকা হচ্ছে। আতংকিত হবার মত কিছু এখনও ঘটে নি।

এদিকে আজ সন্ধ্যায় ফারাক্কার সবচেয়ে নিকটবর্তী জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক বলেন, গেট খোলার সংবাদ শোনা গেছে। তবে এর প্রতিক্রিয়া বোঝা যায় নি। পানি যা বেড়েছে তা স্বাভাবিক। বিগত ২৪ ঘন্টায় আধা ইঞ্চির মত। ইউনিয়ন থেকে ফারাক্কা প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে। ফলে জেলা প্রশাসন থেকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সকল ইউপি সদস্য,গ্রাম পুলিশ,ইউপি সচিবসহ সতর্ক রয়েছেন। ইউনিয়নের সর্বনিম্নাঞ্চল ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, পানি তেমন বাড়ে নি। পদ্মার গহীনের চরাঞ্চলসহ সকল জনপদ নিরাপদ রয়েছে এখন পর্যন্ত। সকল কর্তৃপক্ষ খবর রাখছেন। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।