চাঁপাইনবাবগঞ্জে সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস ও সাঁওতালি সংস্কৃতি মেলা

সদর উপজেলার আমনুরায় সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবস ও সাঁওতালি সংস্কৃতি মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ আমনুরা মিশন স্কুল মাঠে সাঁওতাল বিদ্রোহের ১৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাকিব হাসান তরফদার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার কাঞ্চন কুমার দাস, মেনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি বাংলাদেশ প্রতিনিধি গ্রেগ ভ্যানডেরবিল্ট, প্রোগ্রাম অফিসার জেমস কিস্কুসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল এজেন্সি ফর গ্রীণ রিভ্যুলেশন (এনএজিআর)’র নির্বাহী পরিচালক স্টেফান সরেন।
অনুষ্ঠানে সাঁওতাল বিদ্রোহ দিবসের প্রবন্ধ পাঠ করেন এনএজিআর’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার প্রদীপ হেমব্রম। আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন এনএজিআর’র নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদ এর সদস্য ও উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হিঙ্গু মুরমু, রবীন্দ্রনাথ হেমব্রম, ঝিলিম ইউপি সদস্য মাসুদ পারভেজ সহ অন্যরা।
মেনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি (এমসিসি)’র অর্থায়নে, উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরাম ও আমনুরা মিশন যুব উন্নয়ন সংঘের সহযোগিতায় এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ন্যাশনাল এজেন্সি ফর গ্রীণ রিভ্যুলেশন (এনএজিআর)। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রদীপ হেমব্রম। অনুষ্ঠানে সাঁওতালি নেতৃবৃন্দ সাঁওতাল বিদ্রোহের ইতিহাস ও তাদের বিভিন্ন সমস্যরা কথা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাকিব হাসান তরফদার বলেন, আপনাদের যেকোন সমস্যা নিয়ে আমাদের কাছে আসবেন। আপনাদের সকল সমস্যা গুরুত্বসহারে সমাধানের সর্বাত্ত্বক চেষ্ঠা করব।
অনুষ্ঠানে এনএজিআর’র নির্বাহী পরিচালক স্টেফান সরেন বলেন, এমসিসি’র অর্থায়নে সাঁওতালি ভাষায় রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ৪টি উপজেলায় ১৫ টি প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও এনএজিআর অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শান্তি স্থাপন, ঐতিহ্য-সংস্কৃতি সংরক্ষণ এবং সামাজিক সচেতনতা নিয়ে কাজ করছে। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষিত এবং বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করা।
নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদ এর সদস্য ও উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি হিঙ্গু মুরমু বলেন, আজকে সাঁওতাল বিদ্রোহের ১৭০ বছর পরেও সাঁওতাল জাতিসহ অন্যান্য অনগ্রসর জনগোষ্ঠী নিপীড়িত। ব্রিটিশ মহাজন, জোতদারদের বিরুদ্ধে এই সাঁওতালরা তীর ধনুক নিয়ে বুক চিতিয়ে রুখে দাড়িয়েছিল। আজ আবারও আমাদের সংঘবদ্ধ হতে হবে সমাজে বৈষম্যর বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে তবেই সিধু-কানহু-চাঁদ-ভাইরোর নেতৃত্বে সংগঠিত হুল স্বার্থক হবে।
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি মেলার ৩টি স্টলে সাঁওতাল বিদ্রোহের ইতিহাস ও সাঁওতালি সংস্কৃতি তুলে ধরা হয়। এছাড়াও সাঁওতালি ঐতিহ্য ও রীতির ডোবঃ-যোহার, সাঁওতালি দং, লাগড়ে, সহরায়, লাকেড়বানাম, দাঁসায়, ডানটা গান ও নাচ প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, নাচোল, গোদাগাড়ী ও নেয়ামতপুরের ৭’শতাধিক সাঁওতালি অংশ নেন।