চাঁপাইনবাবগঞ্জে মন্দিরে হামলার ঘটনায় মামলা, আটক ৪

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের শিবতলা কর্মকারপাড়া এলাকায় অবস্থিত চরজোত প্রতাপ দূর্গামাতা ঠাকুরানী মন্দিরে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ দুপুর ২টার দিকে মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অজিত দাস অজ্ঞাতনামা একদল সংঘবদ্ধ দূস্কৃতিকারীদের আসামী করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন। মামালার এজাহরে অভিযোগ করা হয়, দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত একদল দূর্বৃত্ত গত গতকাল রাত ১০টার দিকে মন্দিরের দেয়াল টপকে প্রবেশ করে। তারা মন্দিরের প্রধান ফটকসহ বিভিন্ন অংশে ভাংচুর চালায় ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে মন্দিরের ক্ষতি সাধণ করে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে স্টিল নির্মিত মন্দিরের প্রধান ফটক। সদর থানার অফিসার ওসি এস.এম জাকারিয়া বলেন, গতরাত ১০টার দিকে এ ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযান শুরু করে। কারা এই ঘটনায় সম্পৃক্ত তা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও বিকেল পর্যন্ত ৪ জনকে মন্দিরে হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আটক করা হয়েছে। মামলার তদন্ত ও আটক অভিযান চলছে। মন্দিরে পুলিশী নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জাানন তিনি। জেলার অন্যতম বৃহৎ এই মন্দিরে সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা নেই বলেও জানান তিনি। এর আগে শুক্রবার রাতে এই হামলার পরপরই সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিক্ষুদ্ধ হয়ে মন্দিরের সামনের রাজশাহী-চাঁপাইনববাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়ক অবরোধ করে। অন্তত: আধাঘন্টাব্যাপী অবরোধে বন্ধ হয়ে যায় মহাসড়কে আমদানী পণ্যবাহী, দুরপাল্লার নৈশ কোচ সহ সকল যান চলাচল। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের বিপুল সদস্য উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। তবে কারা এই হামলায় জড়িত তা শনাক্ত যায় নি। ঘটনার পর রাতেই ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ সহ উর্ধতণ পুলিশ কর্মকর্তারা,গোয়েন্দা পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মন্দিরে ছুটে যান। গত বৃহস্পতিবার(৭ অক্টোবর) প্রায় একই সময় মন্দিরে ইটপাটকেল ছুুঁড়ে হামলার প্রথম ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ওই রাতেই আধা কিলোমিটারের কম দূরত্বে অবস্থিত সেনা ক্যাম্পে জানানো হয়েছিল বলে জানান সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। ঘটনার পর রাত ১২টায় মন্দির গেটে সমবেত হিন্দুদের উদ্দেশ্যে জেলা পুজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি ডাবলু কুমার ঘোষ বলেন, ৭/৮ জন দূস্কৃতিকারী দু’দিন যাবৎ এই হামলা চালাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সামালোচনা করে তাদের কঠোর অবস্থান নিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তিনি জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করেন। অন্যথায় কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারী দেন। হিন্দু অধ্যূষিত ওই এলাকায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাত থেকে হিন্দুদের বাড়িতেও একই ধরণের হামলার ঘটনার কথাও জানান তিনি। পূর্বেও এ্ই মন্দিরে হামলা চালানো হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। জেলা পুজা উদযাপন পরিষদ সাদারণ সম্পাদক ধনঞ্জয় চ্যাটার্জী বলেন, এটি পরিকল্পিত। ধর্মসভা চলাকালীন এমন হামলা বরদাশত করা হবে না। প্রয়োজনে হিন্দুরা সার্বক্ষনিক পাহারা দিবে। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানান। মন্দির কমিটি সাধারণ সম্পাদক অজিত দাস বলেন, মাসব্যাপী পূজাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় আচার চলছে মন্দিরে। শুক্রবার রাতে ‘দীপদান’ অনুষ্ঠানের সময় হামলার ঘটনা ঘটে। শনিবার দুপুর ১২টায় শহরের রামসীতা মন্দিরে হিন্দু নেতৃবৃন্দ সভা করে মামলার সিদ্ধান্ত নেন। শনিবার রাতে চরজোত প্রতাপ দূর্গামাতা ঠাকুরানী মন্দিরে আবারও সভা আহব্বান করা হয়েছে বলেও জানান তিনি