চাঁপাইনবাবগঞ্জে নদীর পানি বৃদ্ধি, শিবগঞ্জে প্রায় ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি

164

শিবগঞ্জের পদ্মায় বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯ পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় রহনপুর স্টেশনে ৬৮ মিলিমিটার, নরসিংদীতে ৬৩ মিলিমিটার, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫৩ মিলিমিটার। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শিবগঞ্জের ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ৫ হাজার পরিবার। উপজেলার মনাকষা, দূলর্ভপুর, পাঁকা, উজিরপুর, ঘোড়াপাখিয়া ও ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে পদ্মা পাড়ের পাঁকা ইউনিয়নের মানুষ। পাঁকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যার মজিবুর রহমান জানান, গত কয়েকদিন থেকে পদ্মার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পাকা ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৭টি ওয়ার্ডে ৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অনেক বাড়ির ভিতরে পানি প্রবেশ করেছে। অসময়ে হঠাৎ করে বন্যার পানি বৃদ্ধি হওয়ায় পানিতে ডুবে গেছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মাষকলাই, শীতকালীন শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসল। মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে শুকনো খাবার ও খাবার পানির অভাব।

এ ছাড়া বাড়ির চারপাশে পানি উঠে যাবার কারনে গবাদি পশু নিয়ে বিপদে পড়েছেন ওই অঞ্চলের মানুষ। এ ছাড়া বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে। গতকাল শিবগঞ্জ উপজেলার বন্যাকবলিত বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানাগেছে, একদিকে বর্ষন অন্যদিকে বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে দুর্ভোগ বাড়িয়েছে বানভাসি মানুষের। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা জানান, অনেক পরিবারে চুলা জ্বালনো সম্ভব হচ্ছে না। জরুরি ভিত্তিতে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি প্রয়োজন। গত শুক্রবার শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ও উজিরপুর এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এদিকে গত ২ দিন থেকে বন্যা কবলিত এলাকা পরির্দশন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা.সামিল উদ্দীন আহমেদ শিমুল ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম। বন্যা কবলিত এলাকা পরির্দশনকালে বন্যা কবলিত মানুষদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দীন আহমেদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চৌধুরী রওশন ইসলাম। একই সঙ্গে বন্যা পিরিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা তৈরির জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেন।

এদিকে, নদ-নদীর পরিস্থিতি সম্পর্কে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীরণ কেন্দ্রের আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৪ ঘন্টা সুরমা ও গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে এবং এই সময়ে কুশিয়ারা নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত থাকতে পারে। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীসমূহের পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে। সতর্কীরণ কেন্দ্রের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর ৯৩টি পানি সমতল স্টেশনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী ৩৬টি পয়েন্টের পানি হ্রাস ও ৫৫টির সমতল বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ৯৩টি পানি সমতল স্টেশনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী সব কয়টি প্রধান নদ-নদীর পানি বিপদ সীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া ২টি পয়েন্টে অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া গতকাল সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯ পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় নরসিংদীতে ৬৩ মিলিমিটার, রাঙামাটিতে ৫২ মিলিমিটার এবং ভারতের ভাগলপুরে ৯৩ ও পাটনায় ৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।