চাঁপাইনবাবগঞ্জে জন্ম নিবন্ধনের হার ৬৮ শতাংশ
‘জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, আনবে দেশে সুশাসন’- এ প্রতিপাদ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালিত হয়েছে। রবিবার আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়।
জেলা প্রশাসন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ। তিনি শাহবাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের মতো জেলার সকল ইউনিয়ন-পৌরসভাগুলোকে শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রম সফল করার আহ্বান জানান।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন- জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও। আলোচনায় অংশ নেন- সিভিল সার্জন ডা. এস এম মাহমুদুর রশিদ। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের মধ্যে বক্তব্য দেন- সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান ও বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. আতাউল হক কমল।
সূচনা বক্তব্যে দিবসটি সম্পর্কে জাতীয় ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. তাছমিনা খাতুন। তিনি তার উপস্থাপনায় জানান, যেসব ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে তা হলো- পাসপোর্ট ইস্যু, বিয়ে রেজিস্ট্রেশন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, নিয়োগ, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভোটার তালিকা প্রণয়ন, জমি রেজিস্ট্রেশন, জাতীয় পরিচয়পত্র, লাইফ ইন্স্যুরেন্স পলিসি, ব্যাংক হিসাব খোলা, আমদানি-রপ্তানি লাইসেন্স, গ্যাস, পানি, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সংযোগ, টিআইএন নম্বর, ঠিকাদারি লাইসেন্স, বাড়ির নকশা অনুমোদন, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্স ও টিকাদান। যেসব ক্ষেত্রে মৃত্যু নিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক তা হলো- উত্তরাধিকার সনদ প্রাপ্তি, পারিবারিক পেনশন প্রাপ্তি, মৃত ব্যক্তির লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দাবি, নামজারি ও জমা ভাগপ্রাপ্তি। শিশুদের জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর পরে হলে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে করতে হবে।
তিনি জানান, জুলাই-২০২৩ হতে মে-২০২৪ পর্যন্ত জন্ম ও মৃত্যুর এক বছবরের মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার জন্ম নিবন্ধনের অগ্রগতি হয়েছে ৬৮ শতাংশ ও মৃত্যু নিবন্ধন ৭৯ শতাংশ। যা জাতীয়ভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ৮ম স্থানে রয়েছে। সদর উপজেলায় জন্ম নিবন্ধনের হার ৮৮.১২ শতাংশ ও মৃত্যু নিবন্ধনের হার ৭১.০২ শতাংশ।
জন্ম নিবন্ধনে বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন বারঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আল আমিন, ঝিলিম ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি পাল।
এসময় জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রশিদ, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাহিদা আখতারসহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা, হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটররা উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে রবিবার বেলা ১১টার দিকে মিনি কনফারেন্স রুমে এ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নীলুফা সরকারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় পৌর নির্বাহী, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সাংবাদিক, ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, উদ্যোক্তা ও গ্রামপুলিশেরা অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনা সভায় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন বিষয়ে টিকার কার্ড, নামের বানান সংশোধন, দিন-মাস ও বছরের বয়স নির্ধারণ ফিসহ বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে কথা বলেন।
আলোচনা শেষে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবসে উপকারভোগীদের হাতে জন্ম নিবন্ধন সনদ তুলে দেন নির্বাহী অফিসার নীলুফা সরকার এবং উপজেলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কার্যালয়ের অফিসার সোহেল রানা।
অপরদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রবিবার সকালে উপজেলা সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। রহনপুর পৌরসভা আয়েজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত আনজুম অনন্যা। বক্তব্য দেন- উপজেলা কৃষি অফিসার তানভীর আহমেদ সরকার, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুল হামিদ, রহনপুর পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা খায়রুল হক, আলিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মুহাম্মদ মাসুমসহ অন্যরা।