চাঁপাইনবাবগঞ্জে চালককে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪, খন্ডিত অটোরিক্সা উদ্ধার
সদর উপজেলায় অটোরিক্সা কেড়ে নিতে তরুণ চালককে নেশাগ্রস্থ করে গলায় মাফলার পেঁচিয়ে হত্যার ঘটনায় সরাসরি জড়িত দু’জন এবং ওই অটোরিক্সার খন্ডাংশ কিনে নেবার দায়ে দুই ভাঙ্গাড়ী ব্যবসায়ীসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিলিং মিশনে সরসরি অংশ নেয়া দু’জন হচ্ছে- রাজশাহীর তানোর থানার কলমা গ্রামের একরামুল হকের ছেলে রকি ও রাজশাহীর মতিহার থানার কাজলা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে জনি। ভাঙ্গাড়ী ব্যবসায়ী দু’জন হচ্ছে- তানোরের হাতিশাহিলপাড়া গ্রামের মৃত ফয়জুদ্দিন মন্ডলের ছেলে জুয়েল ও নওগাঁর মান্দা থানার চৌবাড়িয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সানোয়ার হোসেন।
আজ সকাল সাড়ে ১১টায় পুলিশ সুপার রেজাউল করিম নিজ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং-এ ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, গত শনিবার সকালে মরদেহ উদ্ধারের পর রাতে হত্যা মামলা হবার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পুলিশ অভিযানে হত্যা রহস্য উদঘাটন, জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং কেড়ে নেয়া অটোরিক্সার খন্ডিত অংশ, খন্ডিত অংশ বিক্রির ৩৯ হাজার টাকা উদ্ধার হয়েছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন,গত শনিবার সকালে সদর উপজেলার আতাহার নয়ানগর এলাকায় সরকারি সার গোডাউনের নিকট চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আমনুরাগামী আঞ্চলিক সড়ক পাশের একটি সরিষা ক্ষেত থেকে অটোরিক্সা চালক শ্রী পলাশের (১৭) প্রায় অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে সদর উপজেলার সুন্দরপুর কালিনগর গোদাইটোলা গ্রামের শ্রী লাকফরের ছেলে। মরদেহ উদ্ধারের সময় তার অটোরিক্সা ও মোবাইল ফোন পাওয়া যায় নি। এ ঘটনায় ওইদিন অজ্ঞাতনামাদের আসামী করে হত্যা মামলা করে তার বাবা। এর আগে পলাশ গত ১২ ফেব্রুয়ারী সকালে বাড়ি থেকে অটোরক্সিা নিয়ে প্রতিদিনের ন্যয় ভাড়ার জন্য বের হবার পর ওইদিন সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ হয়। তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে, মামলার পর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও সদর থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে যাত্রীবেশে হত্যায় অংশ নেয়া রকি ও জনিকে তাদের শ্মশুরবাড়ি সদর উপজেলার মহারাজপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাদের দেয়া তথ্যে ভাঙ্গাড়ী ব্যাবসায়ী জুয়েলকে রাজশাহীর তালন্দ বাজারের সমাসপুর মোড়ের নীরব ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ হতে ও অপর ব্যবসায়ী সানোয়ারকে নওগাঁর নিয়ামতপুর থানার নাকোল মোড়ের এনএস ট্রেডার্স নামের ভাঙ্গাড়ী দোকান হতে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যায় জড়িত দু’জনকে জিজ্ঞসাাবাদে জানা যায়, তারা নিহত পলাশকে কিছুদিন থেকে চিনত। তাদের মধ্যে কিছুটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও ছিল। গত শনিবার তারা নাচোল থেকে পলাশের অটো ভাড়া নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের উদ্দেশ্য যাত্রা করে। পথে তারা একত্রে মদ পান করে। এরপর পলাশকে ওই রাতেই হত্যা করে মরদেহ ফেলে রেখে অটো নিয়ে পালিয়ে যায়।
আজ দুপুরে হত্যায় জড়িত রকি ও জনিকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণের জন্য এবং ব্যবসায়ী দু’জনকে চোরাই মাল কেনার দায়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে ও অন্য আর কেউ অপরাধে জড়িত কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান পুলিশ সুপার রেজাউল করিম।