চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম বোর্ড গঠন ও কৃষিভিত্তিক ইপিজেডের দাবি : সাংবাদিকদের সঙ্গে জেলা চেম্বারের মতবিনিময়

108

চাঁপাইনবাবগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি। শনিবার দুপুরে চেম্বারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াহেদ।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় দেশের ৫০ ভাগ আম উৎপাদন হয়। আমকে ঘিরে বহুমানুষের কর্মসংস্থান হয়। আম চাষ, উৎপাদন, বাজারজাতকরণ, প্রক্রিয়াজাতকরণসহ নানা বিষয় জড়িয়ে আছে আমের সঙ্গে। দেশে যদি তুঁত বোর্ড, রেশম বোর্ড থাকতে পারে তাহলে আম বোর্ড কেন থাকবে না? অবশ্যই থাকা উচিত। এজন্য আপনাদের মাধ্যমে সরকারের কাছে আম বোর্ড গঠনের জোর দাবি জানাচ্ছি। তাছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরা-নেজামপুর এলাকায় কৃষিভিত্তিক ইপিজেড করা হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ রাজশাহী ও নওগাঁ জেলার উৎপাদিত কৃষিপণ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে, অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে, বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এখানে রেল যোগযোগসহ সকল সুযোগ সুবিধা হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
ওয়াহেদ জানান, গত ২২ ডিসেম্বর সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ৩১ ডিসেম্বর আমি দায়িত্বভার গ্রহণের পর জেলার অর্থনৈতিক কর্মকা-কে আরো গতিশীল করার জন্য সোনামসজিদ-মহদীপুর ইমিগ্রেশন চালু করার প্রচেষ্টা চালিয়েছি। তারই অংশ হিসেবে আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে সোনামসজিদ-মহদীপুর ইমিগ্রেশনটি চালু হবে বলে আশা করছি। এছাড়া সোনামসজিদ স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি ব্যবসাকে আরো গতিশীল করার জন্য রাজশাহীস্থ ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার শ্রী মনোজ কুমার মহোদয়কে নিয়ে ভারতের মালদা জেলার মহদীপুর, সোনামসজিদ এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জে তিনটি সভা করেছি। মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি যৌথভাবে কাজ করছি। এর ফলে আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসা স্বল্প সময়ের মধ্যে দ্বিগুণ হবে বলে আশা করছি। ইতোমধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও কাস্টম এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, রাজশাহীর সাথে পৃথক দুটি সভা করেছি। আমদানি ও রপ্তানিসহ ভ্যাট ও আয়করের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। সোনামসজিদ স্থলবন্দরে কাস্টমস কর্মকর্তাদের আবাসিক সুবিধা না থাকায় দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আশা করছি অচিরেই সেই সমস্যারও সমাধান হবে।
চেম্বার সভাপতি বলেন, আসছে পবিত্র মাহে রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখার জন্য সরবরাহ নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি জানান, ব্যবসায়ীগণ যেন ঘরে বসে সেবা পেতে পারেন সে জন্য চেম্বারের ওয়েবসাইট তৈরির কাজ প্রায় ৮০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি দ্রুত ওয়েবসাইট চালু হবে। তিনি বলেনÑ আমরা জেলায় কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করে ছোট ছোট শিল্প কারখানা গড়ে তুলব ইনশাল্লাহ।
সভায় আরো বক্তব্য দেনÑ সংগঠনটির সিনিয়র সহসভাপতি মসিউল করিম বাবু ও সহসভাপতি আখতারুল ইসলাম রিমন। এসময় সোনামসজিদ আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি কবিরুর রহমানসহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালকগণ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে চেম্বার ভবনে ব্যবসায়ীদের নিয়ে সংগঠনটির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। আব্দুল ওয়াহেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বার্ষিক আয় ও ব্যয়ের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিনিয়র সহসভাপতি মসিউল করিম বাবু। সভা সঞ্চালনা করেন সহসভাপতি আখতারুল ইসলাম রিমন। এসময় পৌর মেয়র মো. মোখলেসুর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তসিকুল ইসলাম তসিসহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।