চলতি বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ : অর্থমন্ত্রী

601

চলতি অর্থবছরে (২০১৬-১৭) জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি জানিয়েছেন, আগামী অর্থবছরে (২০১৭-১৮) জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৪ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। বর্তমানে দেশে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ খেলাপি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দুই লাখ দুই হাজার ৬২৩ বলে জানান তিনি।  আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে এসব তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী। সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য পিনু খানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, খেলাপি ঋণ আদায়ে সরকার ইতিমধ্যে অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ প্রণয়ন করেছে। ওই আইনের আওতায় খেলাপি গ্রাহকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। এ ছাড়া দেউলিয়া আইন ১৯৯৭ এর আওতায় খেলাপি গ্রাহকদের বিরুদ্ধে মামলা করার মাধ্যমে খেলাপি ঋণ আদায় করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। জাতীয় পার্টির সদস্য পীর ফজলুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, খেলাপি ঋণ আদায়ে সরকার খেলাপি গ্রাহক চিহ্নিতকরণ ও তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ বছর তিন হাজার ১৫২ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় হয়েছে। মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, সোনালী ব্যাংকের ১০ হাজার ৬২৯ কোটি খেলাপি ঋণের বিপরীতে ৬৫৪ কোটি, জনতা ব্যাংকের ছয় হাজার ৫১০ কোটি খেলাপি ঋণের বিপরীতে ২৫৪ কোটি, অগ্রণী ব্যাংকের ছয় হাজার ৮৬ কোটি খেলাপি ঋণের বিপরীতে ৪৮৩ কোটি, রূপালী ব্যাংকের চার হাজার ২৬৪ কোটি খেলাপি ঋণের বিপরীতে ৩২৮ কোটি, বেসিক ব্যাংকের সাত হাজার ৩৭৪ কোটি খেলাপি ঋণের বিপরীতে ১৫০ কোটি, বিডিবিএল’র ৮৫৪ কোটি খেলাপি ঋণের বিপরীতে ১৩০ কোটি, কৃষি ব্যাংকের চার হাজার ৬৭৯ কোটি খেলাপি ঋণের বিপরীতে ৯৩০ কোটি এবং রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের এক হাজার পাঁচ কোটি খেলাপি ঋণের বিপরীতে ২২৩ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। সরকারি দলের সদস্য মামুনুর রশীদ কিরণের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সাময়িক হিসাবের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী জানান, এবার প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ২৪ শতাংশ পৌঁছাবে। উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন তথা শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান, উৎপাদন, রপ্তানিবৃদ্ধি ও রপ্তানিপণ্য বহুমুখীকরণ। এসব কাজকে উৎসাহিত করতে সম্ভাবনাময় এলাকায় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, “সারা দেশে এক শটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালের মে পর্যন্ত ২২টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আর ৫৯টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য স্থান নির্বাচন এবং ৭৬টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গভর্নিং বোর্ড কর্তৃক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ” এ ছাড়া ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আরো ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কাজ উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।