গাদ্দাফির ছেলে সাইফ মুক্ত

327

লিবিয়ার নিহত সাবেক নেতা কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির দ্বিতীয় ছেলে সাইফ আল ইসলামকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে বলা হচ্ছে। বিবিসি জানিয়েছে, বর্তমানে ৪৪ বছর বয়সী সাইফ গত ছয় বছর ধরে লিবিয়ার জিনতান শহরে বেসামরিক একটি বাহিনীর হাতে বন্দি ছিলেন। আবু বকর আল সিদ্দিক ব্যাটেলিয়ন নামের ওই বেসামরিক বাহিনী জানিয়েছে, শুক্রবার সাইফকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ‘মুক্তি’ দেওয়ার কথা বলা হলেও সাইফকে জনসম্মুখে দেখা যায়নি। তবে স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মুক্তি পাওয়ার পর থেকে সাইফ পূর্বাঞ্চলীয় বাইদা শহরে তার স্বজনদের কাছে রয়েছেন। আবু বকর আল সিদ্দিক ব্যাটেলিয়ন জানিয়েছে, তারা লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলভিত্তিক ‘অন্তর্বর্তী সরকারের’ অনুরোধে সাইফকে মুক্তি দিয়েছে। এর আগে ওই ‘সরকার’ সাইফকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল। ত্রিপোলির একটি আদালত সাইফকে তার অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদ- দিয়েছিল। কিন্তু ত্রিপোলি এখন দেশটির পশ্চিমাংশ নিয়ন্ত্রণকারী জাতিসংঘ সমর্থিত জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের অধীনে আছে, যার কর্তৃত্ব মানে না পূর্বাঞ্চল-ভিত্তিক ‘অন্তর্বর্তী সরকার’। এর আগে প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদনে সাইফ আল ইসলামের মুক্তির খবরকে ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করা হয়েছিল। তার মুক্তির খবরটি সত্য হলে এটি লিবিয়ার অশান্ত পরিস্থিতিতে আরেকটি অপ্রত্যাশিত সংযোজন হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। গাদ্দাফি তার দ্বিতীয় এই পুত্রকে নিজের উত্তরাধিকার মনোনীত করেছিলেন। এখনও লিবিয়ায় তার কিছু সমর্থক রয়েছে। তাই তিনি ফের রাজনীতিতে প্রবেশ করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১১ সালে গাদ্দাফির পতনের তিন মাস পর নভেম্বরে নাইজারে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে মরুভূমি থেকে সাইফকে আটক করা হয়। পরে আটক অবস্থার ছবি প্রকাশ হলে দেখা যায়, তার হাতের কয়েকটি আঙুল নেই। সহিংসতা উস্কে দেওয়া ও গাদ্দাফি বিরোধী প্রতিবাদকারীদের হত্যা করার অভিযোগ আনা হয় সাইফের বিরুদ্ধে। চার বছর পর বিচারে গাদ্দাফির অপর ৩০ সহযোগীসহ তাকে ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদ- দেয় ত্রিপোলির একটি আদালত। কিন্তু জিনতানের ওই বেসামরিক বাহিনী তাকে কখনোই ত্রিপোলি কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেনি। মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত সাইফকে ফেরারি ঘোষণা করেছে।